চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দলের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান রাতে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে সোমবার (১২ জুন) দিনগত রাত সোয়া ১টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশ্যে গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে রওনা হন খালেদা জিয়া। রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান তিনি। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে হাসপাতালে খালেদা
এদিন রাতে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ড. এফ এম সিদ্দিকী ও ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এরপরই তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
হাসপাতালে নেওয়ার পর মেডিকেল বোর্ড বেগম জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর মাধ্যমে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে এদিন রাত পৌনে ১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান ও শামা ওবায়েদ গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন। তখন সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকেও দেখা যায়।
আরও পড়ুন: এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে খালেদাকে
এর আগে গত ২৭ এপ্রিল চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
‘বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিতে হবে’- এ দুই শর্তে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তিতে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দফায় দফায় বাড়ে মুক্তির মেয়াদ।
আরও পড়ুন: সুস্থ হলেও নির্বাচন নয়, সাজা খাটতে হবে খালেদাকে
৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে টানা ৮১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর পাঁচ মাস পর ওই বছরের ১০ জুন মধ্যরাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ওই রাতেই তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।
এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিলে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হলে সে দফায় একই হাসপাতালে ৫৪ দিন চিকিৎসা নিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: ফিরোজায় দোয়া মাহফিল, অংশ নিলেন খালেদা-তারেক-জোবায়দা
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।
ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার সাত বছরের সাজা হয়।
কেএইচ/এমকেআর