বিদায় লিখে ফেসবুকে পোস্ট, ভোরে মিললো ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা ৩ মিনিটে ভাঙা চশমার ছবি দিয়ে ‘বিদায়’ লিখে পোস্ট করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক নাবিল হায়দার। এরপর সেহরির সময় খাওয়ার জন্য তাকে ডাকলে কোনো সাড়া না দেওয়ায় বন্ধু ও আত্মীয়রা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাবিল হায়দার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিনের বড় মানিকা ইউনিয়নের মানিকা গ্রামে।
মৃত্যুর খবর জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন নাবিলের বড় ভাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্রলীগ। স্বাভাবিক মৃত্যু না আত্মহত্যা সেটি এখনো জানা যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
মৃত্যুর বিষয়ে নাবিলের বড় ভাই তনয় বলেন, তার ফেসবুক পোস্টটা দেখে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমি নাবিলের বন্ধুর বাসায় যাই। সেখানেই ও মাঝে মধ্যে যায়। গিয়ে দেখি, নাবিল ঘুমাচ্ছে। তার সামনে ইফতারের প্লেট রাখা ছিল। কিছু ইফতার খেয়েছে আর কিছু খায়নি এ অবস্থায়।
‘পরে কিছুক্ষণ বসে থেকে তার বন্ধুর কাছে কিছু টাকা রেখে ঘুমের ভিডিও করে আমি চলে আসি। এসময় ওই বন্ধুকে বলে আসি ঘুম থেকে উঠলে আমাকে ফোন দিতে। কারণ আমি যেই মসজিদে তারাবিহ নামাজ পড়ি সেখানে কোরআন খতম ছিল।’
তনয় বলেন, এরপর রাতে তার বন্ধুকে ফোন দিই। তখন তার বন্ধু বলে, নাবিল ঘুমাচ্ছে। এরপর সেহরির সময় নাবিলের সেই বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে বলে ভাইয়া নাবিলের জন্য তো খাবার দিয়ে আসলাম। নাবিল তো নড়েও না কথাও বলে না। এরপর আমি যেভাবে ছিলাম সেভাবেই বসুন্ধরা থেকে সেখানে যাই। গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিদায় পোস্টের কারণ সম্পর্কে কোনো ধারণা করতে পারছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারণ জানি না। তবে সে কিছুদিন আগে আব্বুকে বলেছে তার বাইক দরকার। বাইকের জন্য তার পোস্ট (রাজনৈতিক পদবি) থাকছে না। আব্বু বলেছেন ওকে গাড়ি দেবে।
‘কিন্তু আমার মনে হয় না এ কারণ নাবিল আত্মহত্যা করবে। গাড়ির জন্য আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নাবিল না’, যোগ করেন তনয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান বলেন, নাবিল কী কারণে মারা গেছেন সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত হোক এটা তার পরিবারও চাচ্ছে না। সে ফেসবুকে বিদায় স্ট্যাটাস দেওয়ায় সবাই ধারণা আত্মহত্যা করেছেন। আমরাও তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে তেমনটাই জানতে পারছি।
আল-সাদী ভূঁইয়া/এমএএইচ/জিকেএস