বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় বিএনপির ক্ষোভ
নির্বাহী আদেশে আবারও খুচরা পর্যায়ে ৫ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার রাতে (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রতিবাদ জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, আওয়ামী সরকার জনগণের চরম দুর্ভোগে, দুর্দিনে একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণকে হতাশা ও অন্ধকারে ধাবিত করছে। দুর্নীতি, লুটপাটের দায় জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত, ভ্রান্তনীতি, ব্যর্থতা এবং অযোগ্যতার কারণে জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এর মধ্যে দফায় দফায় বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ১৪ বছরে ১৩ বার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পর গত জানুয়ারি মাসে ১৯ দিনের ব্যবধানে দুই বার এবং সর্বশেষ আজ আবারও দাম বাড়ানো হয়েছে। অবৈধ লুটেরা আওয়ামী সরকার আবারও শতকরা ৫ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতার শেষে এসে বেপরেয়া লুটপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই বর্তমান সরকার জনগণের ভালো-মন্দ বিচার করতে চায় না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের ব্যাপক পরাজয় হবে, সেজন্য তারা জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতেই দফায় দফায় বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে।
আরও পড়ুন>> ফের বাড়লো বিদ্যুতের দাম
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের উন্নয়ন বুলির আড়ালে লুটপাটের মহোৎসবের কাহিনী এখন মানুষের মুখে মুখে। বিদ্যুতের এ মূল্যবৃদ্ধি সরকারের লুটপাটেরই বহিঃপ্রকাশ। এ মূল্যবৃদ্ধিতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি কলকারখানা ও কৃষিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। প্রতিটি পণ্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এসব পণ্যের দাম আরও বাড়বে, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, সরকারের প্রতিটি নীতি হচ্ছে হরিলুটের নীতি, জনগণ মরে যাক, তাতে সরকারের কিছুই আসে-যায় না। গণবিরোধী সরকারের অঙ্কটি খুবই সোজা। তারা চুরি করে ক্ষতির টাকা জনগণের পকেট কেটে তা পূরণ করছে। আবারও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এর ‘ব্যাড ইমপ্যাক্ট’ খুবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সারাদেশের মানুষ এ ঘোষণার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। জনগণ বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির এ গণবিরোধী ও অযৌক্তিক সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছে। দেশের মানুষের কাছে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের কোনো জবাবদিহি ও কর্তব্যবোধ নেই বলেই জনগণের ওপর জুলুম চালানো হচ্ছে, জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে অবৈধ আওয়ামী সরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান বিনাভোটের সরকার জবাবদিহির তোয়াক্কা করে না বলেই একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। দাম বৃদ্ধিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠলেও সরকার তা পরোয়া করে না। দুর্নীতি ও লুটপাটের ওপর নির্ভর করার জন্য জনগণের কষ্টের কথা বিবেচনায় না নিয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে বেশ কয়েকবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যখন ক্ষুব্ধ তখন আবারও নতুন করে মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণ এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন>> বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটারে গ্রাহকের ‘ডিজিটাল’ ভোগান্তি
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিসহ অপরাপর রাজনৈতিক দলসমূহ বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবং জনদুর্ভোগ সৃস্টিকারী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। এ আন্দোলন আরও বেগবান করে দাবি আদায় করতে হবে।
কেএইচ/ইএ