আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে চলি, অপবাদ দিলে মানবো না: প্রধানমন্ত্রী

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২৯ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
জনসভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী/ছবি: পিআইডি

বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়ে চলে। কেউ মিথ্যা অপবাদ দলে মেনে নেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, সেটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। কারণ দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি, জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি। কেউ যখন মিথ্যা অপবাদ দেয়, সেই অপবাদ নিতে আমি রাজি নই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি বলেই আজ এত দ্রুত গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়ায় আসতে পেরেছি। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছি। বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়ে চলে। কেউ অপবাদ দিলে আমরা তা মানবো না।’

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।

জনসভায় পদ্মা সেতু নির্মাণের সুফলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগে ঢাকা থেকে স্টিমারে বা লঞ্চে গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ায় আসতে ২২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যে আমরা এখানে পৌঁছে গেছি। কোটালীপাড়াবাসীকে আগে শুধু পানি, খাল-বিল, বাঁশের সাঁকো পার হতে হতো। আজ এখানে রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ করে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থিক সুবিধা করে দিয়েছি।’

আরও পড়ুন>> আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে তুলনা হতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অভিযান অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে এ ব্যাপারে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের সন্তানেরা যেন কোনো মাদক বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়, এ ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

জনগণের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কথা দিয়েছিলাম ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেবো, সব ঘর আলোকিত করেছি। তবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। বিশ্বব্যাপী সংকট চলছে। আমরা বিদ্যুতে অর্ধেকের বেশি ভর্তুকি দিচ্ছি। জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করছি। একটি পরিবারও ভূমিহীন, ঘরহীন থাকবে না। জাতির পিতার এ অঙ্গীকার বাস্তবে রূপ দেবো।’

বিশ্বমন্দার প্রসঙ্গ টেনে সবাইকে আবারও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন এবং সব পতিত জমি চাষের আওতায় এনে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে, ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে। করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো।’

আরও পড়ুন>> গোপালগঞ্জে ৪৩ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশের আর্থ সামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের নানান চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাথমিক থেকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। সব উপজেলায় স্কুল, কলেজ করে দিয়েছি। ডিজিটাল ল্যাব করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। ছোট থেকেই যাতে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার শিক্ষা পায়, তার ব্যবস্থা করেছি।’

উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পাই, আমার হারানো বাবা, মা ও ভাইয়ের স্নেহ। আপনাদের এ স্নেহ ভালোবাসাই আমার একমাত্র শক্তি। আপনাদের জন্য সবসময় দোয়া করি, আপনারাও দোয়া করবেন। এ বাংলাদেশকে যেন উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’

জনসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রমুখ। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জনসভায় সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আয়নাল হোসেন।

এর আগে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে জনসভাস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর জনসভাস্থলে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এছাড়া পাঁচটি প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। পরে শেখ হাসিনা জনসভা মঞ্চে ওঠেন। স্লোগান ও করতালিতে জনসভায় আসা মানুষ তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

এএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।