শুরু হচ্ছে মতবিনিময়
যুগপৎ আন্দোলনে তৃণমূলের ঐক্যে মনোযোগী বিএনপি
ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। রাজনীতির মাঠে বাড়ছে উত্তাপ-উত্তেজনা। বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের পালে হাওয়া দিতে মরিয়া বিএনপি। তাই তো দলটির নজর এবার তৃণমূলে। এরই অংশ হিসেবে বিগত দিনে স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন বা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, দল সমর্থিত এমন তিন হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে বসতে চায় বিএনপি। তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের প্রস্তুতিও চলছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বর্তমানে সারাদেশে চার হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। সে হিসাবে ১০টি সাংগঠনিক বিভাগ থেকে তিন সহস্রাধিক তৃণমূল জনপ্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করতে চায় বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনে তৃণমূলের ঐক্যেই এখন মনোযোগ দলটির। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভাগভিত্তিক এ মতবিনিময় শুরু হচ্ছে। এরমধ্যে প্রথম দিন (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু হবে। ওইদিন রংপুর বিভাগের আড়াইশোর বেশি জনপ্রতিনিধি এতে অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন না
এরপর ধারাবাহিকভাবে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগ, ২৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট বিভাগ এবং খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা, ১ মার্চ বরিশাল ও ঢাকা বিভাগ, ৫ মার্চ কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ, ১৩ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগ, ১৪ মার্চ রাজশাহী বিভাগের বগুড়া, চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, ১৫ মার্চ রাজশাহী বিভাগ এবং ১৬ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগের তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের তারিখ ঠিক করেছে বিএনপি। তবে বিশেষ প্রয়োজনে এ সূচিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
এসব মতবিনিময় সভায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা বিএনপির সভাপতি/আহ্বায়ক বা সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিবরা অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় দলের সমর্থনে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, এমন তৃণমূল নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামকে আরও বেগবান ও প্রাসঙ্গিক করতে চায় বিএনপি। মতবিনিময় সভায় তৃণমূল নেতাদের চাওয়া-পাওয়া ও সুবিধা-অসুবিধা জানার চেষ্টাও করা হবে।
গত ২৯ জানুয়ারি তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের তালিকা প্রণয়নের জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং সাংগঠনিক ১০ বিভাগের সাবেক ছাত্র নেতাদের সমন্বয়ে টিম গঠন করা হয়। তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের সার্চ টিমের সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু।
সার্চ টিমে যারা আছেন
ঢাকা বিভাগে ওমর ফারুক শাফিন, আকরামুল হাসান মিন্টু, ওবায়দুল হক নাসির; চট্টগ্রাম বিভাগে বেলাল আহমেদ, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, মামুন অর রশীদ ও মশিউর রহমান বিপ্লব; কুমিল্লা বিভাগে শেখ শামীম, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী; সিলেট বিভাগে কাজী রফিক, ইকবাল হাসান শ্যামল, ময়মনসিংহ বিভাগে শামসুজ্জামান সুরুজ ও আব্দুল বারী ড্যানী; রাজশাহী বিভাগে আব্দুল মতিন, ফজলুর রহমান খাকন ও সালাহউদ্দিন আহমদ বিপিএম; খুলনা বিভাগে আমিরুজ্জামান খান শিমুল, খান রবিউল ইসলাম রবি, মীর রবিউল আলম লাভলু, আবু সাঈদ; বরিশাল বিভাগে হায়দার আলী ললিন, হাসান মামুন, রফিকুল ইসলাম; রংপুর বিভাগে আশফাকুল ইসলাম সরকার মুনু এবং ফরিদপুর বিভাগে আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন।
আরও পড়ুন: কড়া নজরদারিতে বিএনপির ‘সন্দেহভাজনরা’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জাগো নিউজকে বলেন, তৃণমূল থেকে দলকে সংগঠিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনেক অবদান রয়েছে। এখন তাদের দলের কাজে সম্পৃক্ত করা নিয়মিত সাংগঠনিক প্রক্রিয়ারই একটি অংশ। দলের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় এই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সার্চ টিমের সদস্য আমিরুজ্জামান খান শিমুল বলেন, বিএনপি থেকে যারা বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ দলে ভালো অবস্থানে আছেন, আবার কেউ কেউ অনেকটা দূরে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতেই এ উদ্যোগ। দলের পক্ষে আমি যাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি সবাই খুব ভালোভাবে সাড়া দিয়েছেন। প্রত্যেকেই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি’র কূটনৈতিক তৎপরতা আন্দোলন নাকি নির্বাচনমুখী?
দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জাগো নিউজকে বলেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে এ মতবিনিময় শুরু হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পর্যায়ের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করা হবে। আগামী এপ্রিল মাস পর্যন্ত আমাদের এ সিরিজ বৈঠক চলবে।
কেএইচ/এমকেআর/জিকেএস