১৪ বছরে ৫০ লাখ নেতাকর্মী বানোয়াট মামলার শিকার: মোশাররফ
গত ১৪ বছরে বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মী বানোয়াট মামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ১৪ বছরে ৫০ লাখ নেতাকর্মীর নামে বানোয়াট মামলা করে এবং সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে খুন-গুম করেও বিএনপির নেতাকর্মীসহ দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে এই ফ্যাসিস্ট সরকার দমাতে পারেনি। তাই ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়বে, সরকারের বিদায় ঘণ্টা ততই ত্বরান্বিত হবে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। গতকাল দেশব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে সারাদেশে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: ইউনিয়ন পদযাত্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মী আহত, দাবি বিএনপির
খন্দকার মোশাররফ বলেন, গতকাল পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচ শতাধিক নেতার্মী আহত হয়েছেন। প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে তারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুই শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলা সত্ত্বেও গণতন্ত্রকামী জনতা দানবীয় সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে এসে কর্মসূচি সফল করে প্রমাণ করেছে- এ সরকার জনবিচ্ছিন্ন। যুগে যুগে কোনো অত্যাচারী সরকার জুলুম, নির্যাতন করে টিকে থাকতে পারেনি, এই সরকারও পারবে না। তাই আমি বলতে চাই, এখনও সময় আছে জনগণের ভাষা বুঝে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে সংসদ বাতিল করে পদত্যাগ করুন।
মোশাররফ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বলতে চাই- নিরীহ-নিরপরাধ জনগণের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করুন। সব অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ করে গ্রেফতার রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। আমি গ্রেফতার সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করছি। আহত নেতাকর্মীদের সুস্থতা কামনা করছি। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আওয়ামী নামধারী প্রশাসনের কতিপয় চিহ্নিত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
আরও পড়ুন: পদযাত্রার নামে সন্ত্রাস ও অরাজকতা করেছে বিএনপি: কাদের
বিএনপির কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দল আন্দোলনে ভয় পায় বলেই পাল্টা কর্মসূচি দেয়। সরকার ভীত বলেই বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ও গ্রেফতার করে।
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মোশাররফ বলেন, এই সরকার কী করছে, না করছে তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। আমরা ১০ দফা দিয়েছি- তার প্রথমটা হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। আমরা সেই ১০ দফা নিয়ে আছি।
এ সময় স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস আওয়ামী লীগে কাছে আহ্বান জানান, নির্বাচনে আগে আপনাদের কী কী কর্মসূচি আছে তা জানান, না হলে বিএনপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি আসা মানে হলো দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়।
আরও পড়ুন: বিএনপির ‘অযাচিত’ সিদ্ধান্ত মানছেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা
স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, দেশের আঠারো কোটি মানুষকে সরকার জোর করে একবাক্য বলাতে পারবে না।তাই রাজপথে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যম সরকার পতনের আন্দোলন সফল হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/বিএ/এমএস