৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগে সমাবেশ করবে বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১২ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩

সরকারের পদত্যাগ, বিরোধী দলীয় নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি, সরকারের দমন-পীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিদ্যুৎ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোসহ ১০দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীসহ বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে সন্ত্রাসের ইতিহাস। সন্ত্রাস কায়েম করে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। আজ ৫০ বছর পরও চিৎকার করে বলতে হচ্ছে, গণতন্ত্র চাই, ভোটাধিকার চাই।

আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে এলডিপি

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যখনই কর্মসূচি দেই, তখনই আওয়ামী লীগ একটা পাল্টা কর্মসূচি দেয়। তাদের পার্টি অফিসের সামনে এখনো সমাবেশ চলছে। তাদের মধ্যে এত আস্থার অভাব আছে। এত ভয়, বিএনপির প্রোগ্রাম করলে না জানি কী হয়ে যায়। এই ভয়ে তারা পাল্টা কর্মসূচি দেয়।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, কোন রাষ্ট্রপতি? তিনি কি কিছু করতে পারেন? তিনি কি প্রধানমন্ত্রীর বাহিরে যেতে পারেন? এজন্য আমরা রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য এনেছি।

ফখরুল বলেন, আজ এ সরকার সচেতনভাবে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচনে তামাশা তৈরি করেছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই- এই তামাশার নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। তাই এই সরকারকে সরাতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সময় হয়ে গেছে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার। তারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এখন দেশের মানুষ ডিম খেয়েও বাঁচতে পারছে না। গ্যাসের দাম বেড়েছে। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। মানুষ আর এ সরকারের শোষণ নিতে পারছে না।

ফখরুল বলেন, আজকের এই দিনে আওয়ামী লীগ সরকারে হাতে গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে। বাকশাল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এই আওয়ামী লীগ সরকার। দেশের মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশের পত্রিকাগুলো বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। সেদিন বাকশাল প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর আমাদের দেশের তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী সেদিন আওয়ামী লীগ সরকারকে সাপোর্ট দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্র বিশ্বাসী নয়। মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু কাজ করে উল্টো। আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে সন্ত্রাসের। আওয়ামী লীগের ইতিহাস অবৈধ ক্ষমতা দখলের। আজ অধিকারের জন্য, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগের সরকারের হাতে প্রাণ দিচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীদের প্রাণ দিতে হয়েছে অসংখ্য।

পাঠ্যপুস্তকে আমাদের ঐতিহ্যবিরোধী বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেগুলো আমাদের ঐতিহ্যবিরোধী, সংস্কৃতিবিরোধী সেগুলো বাতিল করে নতুন করে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে।

আরও পড়ুন: রিজভীর স্বাস্থ্য নিয়ে পরিবারের উদ্বেগ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের মানুষ এ সরকারকে বলতে চায়- আপনারা (সরকার) জনগণের সঙ্গে প্রতারিত করছেন। কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপির নাকি গণতন্ত্রের কথা বলার অধিকার নেই। অথচ আওয়ামী লীগই গণতন্ত্র হত্যা করেছে। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ছয়শ গুম, এক হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করে। সরকার শুধু চাপাবাজি করে।

তিনি বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগ, সেখানে তারা গণতন্ত্র হত্যাকারী, যেখানে বিএনপি সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারকারী। সরকারকে বিদায় জানাতে হবে। নয়তো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে না।

আরও পড়ুন: বিশেষায়িত হাসপাতালে রিজভীর চিকিৎসার দাবি

ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে উত্তর বিএনপি সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলম নজরুল সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কেএইচ/আরএডি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।