‘খায়রুল হককেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে’


প্রকাশিত: ০২:০০ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘অবসরের ১৬ মাস পর রায় লিখে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। এই গুরুতর অপরাধের জন্য একদিন বাংলাদেশের মাটিতে তাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘অবসরের পর রায় লেখা বিচার ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত’-শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সভার আয়োজন করে।

মওদুদ আহমদ বলেন, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ত্রয়োদশ সংশোধনীর ওপর ২০১১ সালের ১০ মে শর্ট অর্ডার (সংক্ষিপ্ত রায়) দেন। ওই সংক্ষিপ্ত রায়ে তিনি বলেছিলেন, ‘পরবর্তী দশম ও একাদশ সংসদের নির্বাচন জাতীয় স্বার্থে এবং জনগণের কল্যাণের জন্য ত্রয়োদশ সংশোধনীতে দেয়া একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এবিএম খায়রুল হক ত্রয়োদশ সংশোধনীর ওপর যে রায় দেন তাতে সুপ্রিমকোর্টের ৭ জন বিচারপতির মধ্যে ৩জন বিচারপতি একমত হন নাই। এই বিষয়ে শুনানিকালে (তৎকালীন) প্রধান বিচারপতি যে ৮জন সিনিয়র আইনজীবীর (অ্যামিকাস কিউরি) মতামত নিয়েছিলেন তার মধ্যে ৭ জনই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধান সম্মত বলে মতামত দিয়েছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, সংক্ষিপ্ত রায় দেয়ার ৭ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২০১১ সালের ১৭ মে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক অবসরে চলে যান। অবসরে যাওয়ার ১৬ মাস পর ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রায়ের আদেশে বিচারপতি আগেকার ঘোষণার ওই অংশটি সম্পূর্ণভাবে বাদ দিয়ে দিলেন। একজন প্রধান বিচারপতি কিভাবে তার নিজের ঘোষিত রায়ের পরিবর্তন করে দিতে পারেন?

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘এই রায়ের (পূর্ণাঙ্গ) মাধ্যমে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক শুধু সংবিধানই লঙ্ঘন করেন নাই, তিনি দেশের প্রধান বিচারপতি হয়ে একটি চরম অনৈতিকতার পরিচয় দিয়েছেন। একটি হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য শুধু নিজের বিবেককেই নয় সারা জাতিকে প্রতারিত করেছেন। একদিন বাংলাদেশের মাটিতে এই গুরুতর অপরাধের জন্য অবশ্যই তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘অবসরে যাওয়ার পর কোনো বিচারকের রায় লেখার এখতিয়ার আছে কি না-সেই বিষয়ে একটি গুরুতর সাংবিধানিক প্রশ্ন উঠে এসেছে, যা বর্তমান প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তার প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক বক্তব্যে এই কথা বলেছেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার বিএনপি তথা বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। এজন্য তারা নানা ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমাদের জোটের মধ্যে, নিজেদের মধ্যে ঐক্য অটুট রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে যেন কোনো বিভেদের সুর না থাকে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন-বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,  মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।

এমএম/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।