বিএনপির সমাবেশ
আ’লীগ যেন বাধা দিতে না পারে ডিএমপি কমিশনারকে জানিয়েছি: আমান
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের অনুমতি এবং সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের আসতে বাধা দেওয়াসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যেন কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারকে জানিয়েছি।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় মিন্টো রোডের ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি বিভাগীয় শহরে আমাদের সমাবেশ হয়েছে। আগামীতে ছয়টি বিভাগীয় শহরে সমাবেশ রয়েছে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এর জন্য অনুমতি চেয়েছি। তারা বলেছেন, আলোচনা করে আমাদের জানাবেন।
নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হামলা-মামলার বিষয় তুলে ধরার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, পল্লবীতে পুলিশ আমাদের ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ১১ নভেম্বর বনানীতে ৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের নামে কোনো মামলা ছিল না। কোনো গুরুতর অভিযোগ ছিল না। ধরে নিয়ে পরে একটা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মতিঝিলে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি চলছে। কমিশনারকে এগুলো জানানো হয়েছে। যাদের গ্রেফতার করেছে তাদের কোনো মামলা ছিল না, তাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য বলেছি। দেশব্যাপী যে গ্রেফতার অভিযান চলছে সেগুলো বন্ধ করা এবং যাদের গ্রেফতার করেছে তাদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলেছি। কমিশনার বলেছেন খোঁজ নিয়ে দেখবেন। যদি তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট না থাকে এবং মামলা না থাকে তাহলে দেখবেন।
আমান বলেন, আগামী ১০ তারিখে আমাদের গণসমাবেশ রয়েছে, সেই অনুমতির জন্যই আমরা এখানে এসেছি। পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই গণসমাবেশের অনুমতি চেয়েছি। এটা ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ। আমরা বলেছি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হবে না। পুলিশও নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবে, তারা বলেছেন সেটা তারা জানাবেন।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন আমাদের বিভাগীয় গণসমাবেশের সময় সব গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা বলেছি, এ ধরনের পরিবহন বন্ধ করা যাবে না। আমাদের সমাবেশে যারা আসবে তাদের যেন বাধা না দেওয়া হয় এবং তাদের ওপর যেন কোনো আক্রমণ না করা হয়। আমারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবো। আমাদের নেতাকর্মীরা আসবে। আমরা কমিশনারকে বলেছি, আপনি বিএনপির কিংবা আওয়ামী লীগের কমিশনার নন। আপনি সরকারি কর্মকর্তা, আপনি আপনার দায়িত্বগুলো পালন করবেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করবো।
এই বিএনপি নেতা বলেন, আমরা জনগণের দাবিদাওয়া নিয়ে সমাবেশ করছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ অর্থনৈতিক যে অবস্থা সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলছি, আন্দোলন করছি। অথচ ভোলা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, যশোরে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছি। আমরা জনগণের দাবি নিয়ে সমাবেশ করছি। জনগণ আমাদের সঙ্গে সাড়া দিয়েছে।
আরও পড়ুন: গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি: ডিএমপি
এসময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চাই বিভিন্ন বিষয় চিন্তা করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছে। আমরা দেখেছি যুবলীগ সমাবেশ করেছে, সারাদেশ থেকে ঢাকা শহরে গাড়ি এনে ভরে রেখেছে। আশা করি আমাদের মিটিংয়ে যেন কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে। সে বিষয়গুলো আমরা কমিশনারকে বলেছি। আর আমরা চেষ্টা করবো সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য। কেউ যেন বাধা না দেয়। আমরা চাই না এই সমাবেশের আগে সরকারি দল কোনো আতঙ্ক তৈরি না করুক। কিন্তু তারা একটি আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এতে জনগণ আতঙ্কিত হবে না। অন্যান্য বিভাগীয় যে গণসমাবেশ হয়েছে এটা তারই ধারাবাহিকতা। আমরা এই সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি সেদিন ঘোষণা করবেন আমাদের মহাসচিব।
তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনার গণসমাবেশের বিকল্প স্থানের কথাও জানতে চেয়েছেন। কিন্তু আমরা বলেছি, এটা আমাদের দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবো।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় মিন্টো রোডে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে একে একে বিএনপির নেতারা প্রবেশ করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্যসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সদস্যসচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনু।
আরএসএম/ইএ/এমএস