চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে কমিশন গঠন


প্রকাশিত: ০৬:৫৬ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

স্থায়ী কমিটির সুপারিশক্রমে দলীয় গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

এছাড়া বিএনপির আসন্ন ষষ্ঠ কাউন্সিল সফল করার জন্য দলের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তুতি কমিটি এবং ১১টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চেয়ারপারসন করে ওই প্রস্তুতি কমিটি (জাতীয় কাউন্সিল ও সম্মেলন-২০১৬ প্রস্তুতি কমিটি) গঠন করা হয়েছে। সকল উপ-কমিটির আহ্বায়করা এ কমিটির সদস্য।

বুধবার রাতে খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু ও সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দলের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের লক্ষ্যে দলীয় গঠনতন্ত্রের প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় দলের চেয়ারপারসনকে অনুরোধ করা হয়। দলের গঠনতন্ত্রে তাকে সে অধিকার দেয়া হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে দলের চেয়ারপারসন গঠনতন্ত্রের ১৯ (ক) ধারায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী অনুমোদন করেছেন।

তিনি জানান, স্থায়ী কমিটির সভায় সংসদীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলের চেয়ারপারসন ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান, “এই কমিশনের চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। এছাড়া বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মো. আমিনুল হককে সদস্য সচিব এবং ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হারুন আল রশিদকে সদস্য করা হয়েছে।”

বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল সফল করার জন্য দলের পক্ষ থেকে ১১টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্ববায়ক হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া ঘোষণাপত্র গঠনতন্ত্র সংশোধন উপ-কমিটির আহ্ববায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, শৃঙ্খলা ও সেবা উপ-কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রি. জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ, ব্যবস্থাপনা ও প্রচার উপ-কমিটির আহ্বায়ক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড্রাফটিং উপ-কমিটির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম খান, আন্তার্জাতিক সম্পর্ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক সাংবাদিক শফিক রেহমান, প্রকাশনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান,

এছাড়া চিকিৎসা সেবা উপ-কমিটির আহ্বায়ক চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দফতর ও যোগযোগ উপ-কমিটির আহ্বায়ক দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এবং সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির আহ্বায়ক দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। অর্থ উপ-কমিটির আহ্বায়কের নাম পরে জানানো হবে।

কাউন্সিলের স্থান ও ভেন্যু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করি, আগামী ১৯ মার্চ আমাদের জাতীয় কাউন্সিল করতে পারব। ভেন্যু হিসেবে আমরা তিনটি জায়গা চেয়েছি। কিন্তু আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। আশা করছি, দুই-একদিনের মধ্যে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারব। ভেন্যু চূড়ান্ত হলে যথা সময়ে আমরা তা জানিয়ে দেব।

বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে কাউন্সিলের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে কি না -এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে তিনি বলেন, কাউন্সিলের কোনো ভেন্যুই এখনো নির্ধারিত হয়নি। চূড়ান্ত হলে তা জানানো হবে।

ফখরুল বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট হয়েছে, যার সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্তের মিল নেই। এটি দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে না বলা পর্যন্ত রিপোর্টগুলো না করা সকলের জন্যই ভালো।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আরো বলেন, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেছেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মামলা দায়েরের অনুমতি দেয়।

স্থায়ী কমিটির সভা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়েরকে একটি গভীর চক্রান্ত বলে মনে করছে। জনগণের দ্বারা বার বার নির্বাচিত যে প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলা দায়ের দেশকে রাজনীতি শূন্য করবার আরেকটি চক্রান্ত।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএম/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।