আমরা ভোট বর্জনের রাজনীতি করি না: চুন্নু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৮ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২২

ইভিএম মেশিনের দোষ নেই, যারা চালায় তাদের দোষ। ইভিএমে নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের সবসময়ই আপত্তি। আপত্তি সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধরে রাখার জন্য এই নির্বাচনে গেলাম। আগামী নির্বাচনে কি করব সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। আমরা ভোট বর্জনের রাজনীতি করি না।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা বলেন। ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিইসির রুমে সাক্ষাৎ করেন।

চুন্নু বলেন, যদিও আমরা ইভিএমের নির্বাচনের পক্ষে না। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনটা ইভিএমে হবে। কিন্তু আমাদের জাতীয় পার্টির কালচার আছে আমরা নির্বাচন বর্জন করি না। নির্বাচন বর্জন করাকে আমরা মনে করি গণতন্ত্রকে ব্যাহত করবে। তাই আমরা প্রতিবাদ হিসেবে সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। সেই নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে এসেছিলাম।

ইভিএমের ভোটে সিসিটিভি থাকবে কিনা সে বিষয়ে জানতে চেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইভিএমে নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করছি দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে। যদিও আমরা নীতিগতভাবে ইভিএমের নির্বাচনের বিরুদ্ধে। তারপরও বলছি এই নির্বাচনটা যদি ফেয়ার করতে পারেন। মানুষের কিছুটা আস্থা আসতে পারে। নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য করতে কি কি পদক্ষেপ নেবেন সে বিষয়ে আমরা তাদের বলেছি। তারাও আমাদের বলেছে।

সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার মৃত্যুতে গত ২৪ জুলাই গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসন শূন্য হয়। আগামী ১২ অক্টোবর এ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা পরিষদ ভোটের প্রসঙ্গ টেনে চুন্নু বলেন, গাইবান্ধা জেলা পরিষদে অনেক এমপিরা তাদের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণা করছেন। নির্বাচনী কাজে বাধা দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের লোকেরা আমাদের প্রার্থীদের গাড়ি ভাংচুর করেছে। এগুলো নিরসন করার জন্য এবং জেলা পরিষদ ভোটে সব কেন্দ্রে সিসিটিভির ব্যবস্থা করার কথা বলেছি। প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তারা বলছে জোর করে ভোট নেবেন। যারা এজেন্ট হবে তাদের এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না বলে যোগ করেন তিনি।

সিইসির কাছে জাতি আশা করে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বলেছেন ভয় ভীতির উর্ধ্বে থেকে ভালো নির্বাচন দেওয়ার মতো মানসিকতা আছে, ইচ্ছা আছে। সেই ইচ্ছার প্রতিফলনটা জেলা পরিষদ নির্বাচন এবং গাইবান্ধা ভোটে দেখতে চাই।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সরাসরি নজরদারি দেখছি না এই কারণে যে আমাদের প্রার্থীকে অপমান করেছে। প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর করেছে। থানায় গেছে মামলা নেয়নি। সেখানে জিডি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে সরাসরি হস্তক্ষেপ আমরা দেখছি না। জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সাংগঠনিক কার্যক্রম করবে এটার ইনটেনশন হলো নির্বাচনে ভোট চাওয়ার জন্য।

চুন্নু বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) আমাদের বলেছেন আগামী দু’একদিনের মধ্যে কমিশন সভায় তারা সিদ্ধান্ত নেবে। তারা আমাদের বলেছে, তারা আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে খুবই অনড় ও শক্ত অবস্থানে আছে। সিইসি বলেছেন এখন পর্যন্ত সংসদের উপ-নির্বাচনে সিসি টিভি ব্যবহার করার কথা রয়েছে তবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিসি টিভি ব্যবহারের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী কমিশন সভায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিসি টিভির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন শতভাগ ফেয়ার হয়েছে বলে কেউ বলতে পারবে না। যখন যেই দল নির্বাচনে জেতে তখন তারা বলে নির্বাচন ফেয়ার হয়েছে। বাকিরা বলে নির্বাচন ফেয়ার হয়নি।

জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে আমরা সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় আপত্তি থাকা সত্ত্বেও আমরা অংশগ্রহণ করছি। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে প্রতিষ্ঠিত করতেই আমরা এটা করি।

দেশের ৬১ জেলায় ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২৭ জন, সংরক্ষিত পদে ১৯ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৬৮ জন এবং তিন পদে সব মিলিয়ে ১১৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছে।

এইচএস/এমআরএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।