চা দোকানি হত্যা : শ্রীধামকে বাদ দিয়ে শাস্তির সুপারিশ
চাঁদা না পেয়ে চা দোকানি বাবুল মাতব্বরকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে তিন এসআইসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এদের মধ্যে এসআই শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদারকে বাদ দিয়ে বাকিদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। অথচ বুধবার যখন বাবুলের গায়ে আগুন লাগে তখন ঘটনাস্থলে শ্রীধাম ছিলেন বলে দাবি করেছিলেন বাবুলের পরিবার।
এর আগে গত বুধবার রাতে চাঁদা না পেয়ে চা দোকানি বাবুল মাতব্বরকে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠে শাহ আলী থানা পুলিশ এবং পুলিশের সোর্সের বিরুদ্ধে। পরদিন বৃহস্পতিবার বাবুল মারা গেলে প্রত্যাহার করা হয় ৫ পুলিশ সদস্যকে। তারা হচ্ছেন- শাহ আলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদার, এসআই মমিনুর রহমান, এসআই নিয়াজউদ্দিন মোল্লা, সহকারী এসআই জোগেন্দ্রনাথ ও কনস্টেবল জসীমউদ্দীন। প্রত্যাহার করা হয় শাহ আলী থানার ওসি এ কে এম শাহীন মণ্ডলকেও।
রোববার এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন ডিএমপি হেড কোয়ার্টার্সের ডিসিপ্লিন শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) টুটুল চক্রবর্তী। প্রতিবেদনে এসআই মমিনুর রহমান, এসআই নিয়াজউদ্দিন মোল্লা, সহকারী এসআই জোগেন্দ্রনাথ ও কনস্টেবল জসীমউদ্দীনের ‘দায়িত্বে ত্রুটি বিচ্যুতি’ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে শ্রীধামের জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অথচ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পাশে বাবুলের এক ভাতিজা ও তার পরিবার দাবি করে, ঘটনাস্থলে পুলিশের সোর্স ও বেশ কয়েকজন সদস্য ছিলেন। তবে এদের মধ্যে এসআই শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদারকে আগে থেকেই চিনতেন তারা। প্রত্যক্ষদর্শী থাকার পরেও টুটুল চক্রবর্তীর তদন্ত থেকে সেই শ্রীধামকেই বাদ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘রিপোর্টটি জমা দেয়া হয়েছে। তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে এখনি কোন মন্তব্য করা যাবে না।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতিবেদনে শ্রীধামকে বাদ দিয়ে ৪ জনের ‘দায়িত্বে ত্রুটি বিচ্যুতি’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অপরাধের অবস্থা অনুযায়ী তাদের শাস্তি দেয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।’
শ্রীধামকে বাদ দেয়ার বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘শ্রীধামের জড়িত থাকার বিষয়ে প্রতিবেদনে কিছু লেখা হয়নি।’
শ্রীধামকে বাদ দেয়ার প্রসঙ্গে বাবুলের ছেলে রাজুর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি তদন্তের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়ার কথা বললেও রোববার মামলার বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
এ ঘটনায় শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে বাবুলের বড় মেয়ে রোকসানা। এতে ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার ১ নম্বর আসামি পারুলসহ আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এআর/জেএইচ/এসএম