জেলায় জেলায় আয়নাঘর বানিয়েছে সরকার: রিজভী
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের জন্য সরকার জেলায় জেলায় আয়নাঘর তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদী কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সব নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় দল।
রিজভী বলেন, ক‘দিন আগে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন বিএনপির মিছিলে পুলিশ আর বাধা দিবেনা। কিন্তু আমরা তার উল্টোটা দেখলাম। ওই বক্তব্যের পরপরই হামলার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। শ্রীনগর, ফেনী, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী রক্তাক্ত হচ্ছে। পুলিশ দাড়িয়ে থেকে আওয়ামী লীগের দ্বারা এসব করছে। এই হলো আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার শাসন। কেউ যদি তার কথা বিশ্বাস করে তবে তারা বিভ্রান্তির মধ্যে বাস করছে।
হবিগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হাফিজুল ইসলাম হাফিজকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু স্বীকার করছেনা। আসলে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গায়েবি প্রধানমন্ত্রী শাসন করছেন। কারণ তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি বৈধ প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি গায়েবি ভোটের প্রধানমন্ত্রী। আমি অবিলম্বে ছাত্রদলের নেতা হাফিজের সন্ধান ও তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
‘আজকে খালেদা জিয়াকে চ্যালেঞ্জ মনে করে বলেই সরকার তাকে বন্দী রেখেছে। কারণ তিনি হলেন দেশের গণতন্ত্র রক্ষার, বাকস্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের প্রতীক। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকলে দেশে শান্তি থাকবেনা। সরকার নির্বাচন কমিশন ও ভোটকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে। গণতন্ত্রকে লাইফ সাপোর্টে পাঠিয়েছে। এখন সরকার নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা ভোগ করছেন। তবে আপনি ভুল করছেন। ১৮ কোটি মানুষের দেশে এই স্বপ্ন আর পূরণ হবেনা।’
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার চেতনা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাজিয়ে সারাদেশে জেলায় জেলায় আয়না ঘর বানিয়েছে। যেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ধরে নিজেদের মনমতো স্বীকারোক্তি আদায় করছে। আজকে হাফিজুরকে কোন আইনে আটক রাখা হয়েছে তার জবাব দিতে হবে। কিন্তু জনতার উত্তাল স্রোতে সেই আয়নাঘর তুলার মতো উড়ে যাবে।
‘আজকে গরিবের মোট চালের দাম ৬০ টাকা কেজি। সবকিছু ওপর ডাকাতের মতো নিয়ন্ত্রণ তৈরি করেছে। যতই আয়নাঘর বানান জনগণ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। আপনি কোন রুটে পালাবেন সেই প্রস্তুতি নিন। আপনাকে বিদায়ের দাবিতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। আপনাকে যেতেই হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে কঠোর আন্দোলন করতে হবে। এবারের লড়াই হবে তিন বেলা মাংস খাওয়া এমপি মন্ত্রীদের সঙ্গে বছরে একবার মাংস না খাওয়া মেহনতি জনতার।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার মহাসচিব এসএম শাহাদাত, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
কেএইচ/জেএস/এমএস