অরক্ষিত রেলক্রসিং, দুর্ঘটনা নয় হত্যাকাণ্ড: রব

সারাদেশে রেলক্রসিং অরক্ষিত রেখে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি মূলত হত্যাকাণ্ড বলে মন্তব্য করেছেন জেএসডি সভাপতি অ স ম আব্দুর রব। রেলক্রসিং সুরক্ষা করতে ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব দাবি জানান।
রব বলেন, সারাবিশ্বে রেলপথ নিরাপদ হলেও বাংলাদেশে লেভেলক্রসিং অরক্ষিত থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে লেভেলক্রসিংগুলো যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে অসংখ্য মৃত্যুতে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ প্রতিফলন হয় না।
তিনি বলেন, শুধু গত সাত মাসে রেলপথে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭৮ জন। আর আহত হয়েছেন এক হাজার ১৭০ জন। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে জানা যায়, রেলপথে দুই হাজার ৮৫৬টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে অবৈধ এক হাজার ৩৬১টি। সেই হিসাবে প্রায় ৪৮ শতাংশ অবৈধ। এছাড়াও বৈধ লেভেলক্রসিংগুলোর মধ্যে ৬৩২টিতে গেটম্যান নেই। দেশে ৮২ শতাংশ রেলক্রসিং অনিরাপদ।
‘একটি রাষ্ট্রে অরক্ষিত লেভেলক্রসিং থাকবে আর প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় মানুষ নিহত হবে এটা সভ্য দেশে চিন্তাও করা যায় না। রেলক্রসিংগুলোতে নিরাপদ সুরক্ষায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হত্যাকাণ্ডের সব দায় সরকারকে বহন করতে হবে।’
জেএসডি সভাপতি বলেন, অরক্ষিত রেলক্রসিং এ অসংখ্য প্রাণ ঝরে যাওয়ার পরও সরকার কোনো জোরালো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং প্রতিটি দুর্ঘটনার পর লোক দেখানো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপও নেওয়া হয় না, এমনকি দুর্ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির আওতায়ও আনা হয় না। রেল কর্তৃপক্ষ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির কোনো তথ্যও সংগ্রহ করে না।
দাবিগুলো হলো-
১. বৈধ-অবৈধ সব ধরনের অরক্ষিত লেভেলক্রসিং নিরাপদ করতে হবে। রেলক্রসিং এ প্রাণহানির দায়ে শাস্তির বিধান করতে হবে।
২. সব লেভেল ক্রসিং এ প্রয়োজনীয় গেটম্যান নিয়োগ করতে হবে। গেটকিপার পদ স্থায়ী করতে হবে।
৩. প্রত্যেক রেলক্রসিংয়ে শক্তিশালী গেটবার বা পথরোধক স্থাপন করতে হবে। রেলক্রসিংয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
৪. দুর্ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে ও রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দায় নির্ধারণ করতে হবে। রেল ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. গেটম্যানদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে কর্তৃপক্ষর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।
৬. যানবাহন চালকদের সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে।
৭. সড়কে প্রাণহানির দায়ে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
৮. নিরাপদ সড়ক ও রেলপথ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কেএইচ/আরএডি/জিকেএস