নিখোঁজের ১২ দিন পর মিললো কিশোরী বধূর লাশ
নিখোঁজের ১২ দিন পর ঝুলন্ত লাশ মিললো কিশোরী বধূ আছমা আক্তারের (১৫)। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের ভূজপুর থানা পুলিশ নারায়ণহাট বাদুর খীল ত্রিপুরার পাড়ার জঙ্গল থেকে লাশটি উদ্ধার করে। আছমার ঝুলন্ত লাশের পাশেই মিলেছে একটি অর্ধখোড়া কবর। ধারণা করা হচ্ছে আছমাকে হত্যার পর তড়িঘড়ি করে লাশ পুঁতে ফেলতে চেয়েছিল ঘাতকচক্র।
তবে পুলিশের ধারণা মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। লাশ গুম করতেই তার পরিবার কবর বা গর্তটি খুঁড়তে পারে। ভূজপুর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক সালাউদ্দিন মোল্লা লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সুত্র জানায়, শৈলকোপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল আছমা। গত বছরের শুরুর দিকে উপজেলার পাইন্দং ডলু এলাকার জনৈক আলী আকবরের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করে। এর পর প্রায় ৬ মাস দুজনই শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকে। সূত্র জানায়, গত একমাস আগে আলী আকবর আছমাকে তার বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এক লাখ টাকা নিয়ে আনার জন্য। এর পর সে আর আছমার খোঁজ-খবর নেয়নি।
এদিকে আছমার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১০/১২ দিন আগে আছমা হঠাৎ নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন দিকে তাকে খোঁজ করলেও তারা থানা পুলিশের কাছে বিষয়টি জানাননি। সর্বশেষ গতকাল স্থানীয় উপজাতীয় লোকজন কাঠ কাটার জন্য জঙ্গলে গেলে টিলার উপর গাছের সঙ্গে একটি ঝুলন্ত লাশ দেখে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে অবহিত করেন।
এরপর খবর পেয়ে ভূজপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে আছমার পরিবারের সদস্যরা লাশটি নিখোঁজ আছমার বলে শনাক্ত করেন।
তবে নিহতের পিতা শাহ আলমের দাবি, তার মেয়েকে হত্যার পর লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের পর লাশকে মাটির নিচে পুঁতে ফেলতেই কবরটি খোঁড়া হয়েছিল। হয়তো কেউ দেখে ফেলায় ঘাতকরা সেটা করতে পারেনি। যৌতুক না পেয়েই তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার।
এ ব্যাপারে পুলিশের উপপরিদর্শক সালাউদ্দিন মোল্লা বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট দেখে ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটি পরিবার এবং স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করতে পারে। মেয়ের আত্মহত্যার পর পরিবারের লোকজনই লোকচক্ষুর আড়ালে লাশটি পুঁতে ফেলার চেষ্টা করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই আসল রহস্য উদঘাটন হবে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আবু জাফর মাহমুদ বলেন, মেয়েটি একটি দরিদ্র পরিবারের। হয়তো স্বামী বা বাপের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করতে পারে।
জীবন মুছা/বিএ