পৃথিবীতে পুঁজিবাদের সর্বশেষ সংকট চলছে: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১২ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী/ফাইল ছবি

বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, পৃথিবী চরম সংকটের মধ্যে চলে এসেছে। এটা করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংকট নয়। এটা পুঁজিবাদের সর্বশেষ সংকট। মানুষের কাছে এখন সভ্যতা ও সাম্যের প্রশ্ন এসেছে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘মানুষ কী এই পুরোনো ব্যবস্থাকে রক্ষা করবে? ব্যক্তিমালিকানার পৃথিবীর যে হাজার বছরের পুরোনো ইতিহাস সেই ইতিহাসকে প্রলম্বিত করবে? এটা বোঝা গেছে, এ পথে ধ্বংস অনিবার্য।’

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪১তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এখন মানুষকে বলা হচ্ছে অসামাজিক হও। মানুষকে বাঁচার জন্য অসামাজিক হতে হচ্ছে। অন্য মানুষের থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে, মুখোশ পরতে হচ্ছে, পরিচয় নিশ্চিহ্ন করতে হচ্ছে। আদিম যুগের অসহায়, একাকিত্ব ও ভীতির যুগে আমাদের ঠেলে দিচ্ছে এই পুঁজিবাদ। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এসব অনেক আগেই জানতেন।’

তিনি বলেন, ‘মওলানা যখন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন তখন তিনি জানতেন, এর ভেতরে রয়েছে পুঁজিবাদ। তিনি পুঁজিবাদের লড়াইটাই করছিলেন। আজ এই পৃথিবীতে পুঁজিবাদের চরম সংকট, ফ্যাসিবাদের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, মানুষ এই গ্রহে বসবাস করতে পারবে কি না? মানুষ নয় কোনো প্রাণী বসবাস করতে পারবে না। কারণ এই গ্রহের প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে। আর এসবের পেছনে রয়েছে পুঁজিবাদ।’

পৃথিবীতে পুঁজিবাদের সর্বশেষ সংকট চলছে: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

তিনি আরও বলেন, ‘মওলানা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। কাজেই এখন পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলন হচ্ছে এবং প্রত্যেক দেশেই এটা হবে। নতুন যে সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার ওপর এই মনুষ্য জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এজন্য পুনোনো যে ব্যক্তি-মালিকানার পৃথিবী সেটাকে বদলে আমরা সামাজিক মালিকানার পৃথিবীতে যেতে পারছি না। ভাসানী বুঝেছিলেন, এই আন্দোলন করতে হবে। আমরা যত সামাজিক আন্দোলনের দিকে যেতে পারবো, তত দ্রুত আমরা মুক্তির দিকে ধাবিত হবো। ভাসানীর স্বপ্ন ছিল রাষ্ট্রের সামাজিক মালিকানা। কতিপয়ের নয়, রাষ্ট্র হবে সব মানুষের।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘মওলানা ভাসানীকে ভুলে যাওয়ার পিছনে ইতিহাস বিকৃতিও একটা কারণ। এজন্য নতুন প্রজন্ম মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে চেনে না। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এ ধরনের মানুষের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তকসহ অন্যান্য মাধ্যমে তার ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।’

ঢাকা মহানগর ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক হাবীবুর রহমান রিজুর পরিচালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, মেজর (অব.) মো. হানিফ, হক কথা পত্রিকার সম্পাদক ইরফান বারী, ১৯৬৯ এর শহীদ আসাদের ছোট ভাই ডা. নূরুজ্জামান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য আক্তার হোসেন প্রমুখ।

এসএম/এআরএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।