মুরাদকে দলীয় পদ থেকে অপসারণের সুপারিশ করবো: হানিফ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১

অশ্লীল কথাবার্তা বলায় সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে দলীয় পদ থেকে অপসারণের জন্য আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সুপারিশ করবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আইইবি মিলনায়তনে তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নতুন কমিটির অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আমরা সংগঠন করি। তাই নীতি-নৈতিকতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করি। সমাজের প্রতি আমাদের দায় আছে। মানুষ প্রত্যাশা করে, যারা দায়িত্বশীল পদে থাকে তারা ভালো কাজ করবে, ভালো কথা বলবে। কিন্তু আমরা অনেক সময় নৈতিকতার স্খলন দেখি। কিছুদিন আগে গাজীপুরের মেয়রকে কিন্তু অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। ডা. মুরাদ হাসানকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছে। সেটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। এর মধ্য দিয়ে একটি বার্তা পরিষ্কারভাবে দেওয়া হচ্ছে, আওয়ামী লীগের জন্য শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো ব্যক্তি অপরিহার্য নন। কোনো নেতার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠলে তার আওয়ামী লীগ করার আর সুযোগ থাকবে না।

তিনি বলেন, ডা. মুরাদ হাসান অত্যন্ত নিম্নমানের রুচিহীন কথা বলেছেন। আমি অবাক হয়ে যাই, একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে কীভাবে এসব বলেন? এরকম রুচিহীন ব্যক্তি যার মধ্যে নিম্নতম রুচিবোধ নেই, অশ্লীল কথা বলে। এরকম ব্যক্তির সাংগঠনিক কোনো দায়িত্বশীল পদে থাকার সুযোগ নেই, তিনি সেই সুযোগ হারিয়েছেন। সংগঠনের যেই পদে থাকুক না কেন সেই পদ থেকে অপসারণের জন্য আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সুপারিশ করবো।

বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতারা নাটক করছেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মানবতা দেখিয়ে কারাবিধির বাইরে গিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্বাহী ক্ষমতায় বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন। দণ্ড স্থগিত রেখে তার চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছেন। পৃথিবীর কোথাও কয়েদিকে এমন সুযোগ দেওয়ার নজির নেই। বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, তাকে বিদেশে পাঠাতে হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বেগম জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে সকাল-বিকাল প্রেস ক্লাবের সামনে অযৌক্তিক দাবি তুলে বক্তব্য রাখছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে চিকিৎসা দেশের আইনের মধ্যে পড়ে না। দয়া করে প্রতিদিন প্রেস ক্লাবের সামনে নাটক করা বন্ধ করুন। দণ্ড স্থগিত অবস্থায় কেউ দেশের বাইরে যেতে পারে না। একমাত্র দণ্ড মওকুফ হলে তিনি বিদেশে যেতে পারেন। দোষ শিকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ আছে। রাষ্ট্রের অভিভাবক দয়ালু মানুষ। তিনি চাইলে ক্ষমা করে দিতে পারেন।

তিনি বলেন, কারও দয়ায় বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হয়নি। আমরা যুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ স্বাধীন করেছি। এই স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতার ২১ বছরের আন্দোলনের পথ মসৃণ ছিল না। ১৩ বছর বিভিন্ন জায়গায় কারাবরণ করেছেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফার ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সোপান রচিত হয়েছিল। রেসকোর্স ময়দানের ১৯ মিনিটের ভাষণে তিনি বাঙালিকে জাগিয়ে তুলেছেন। স্বাধীন, আত্মমর্যাদাশীল বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার পালাবদলের জন্য ছিল না। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিল একাত্তরের চরম প্রতিশোধ।

তিনি বলেন, ৫০ বছরের মাথায় দাঁড়িয়ে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো নেতা নেই। আওয়ামী লীগ বা অন্য দল, কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বেই আমরা সোনার বাংলা গড়বো।

এসইউজে/বিএ/জিকেএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।