পৌর নির্বাচন ও শক্তিশালী কমিশন
পৌরসভা নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা আগে আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। ৩০ ডিসেম্বর হবে ভোটগ্রহণ। শেষ মুহূর্তের প্রচারণা নিয়ে প্রার্থীদের ঘুম নেই। সমর্থকরাও নিজ দলের প্রার্থীদের জন্য ভোট চাইতে ঘুরছেন বাড়ি বাড়ি। চায়ের কাপেও ঝড় উঠেছে। শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে পৌর নির্বাচনের ডামাডোল বাড়তি উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সবার লক্ষ্য এখন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শন্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন। যার মধ্য দিয়ে ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি বেছে নিতে সক্ষম হবেন।
এবারের নির্বাচনে ২৩৪টি পৌর সভায় মেয়র ও কাউন্সিলর মিলিয়ে প্রায় কয়েক হাজার প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এবারই প্রথম দলীয়ভাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় বাড়তি একটি মাত্রা যুক্ত হয়েছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় স্থানীয় নির্বাচনেও জাতীয় নির্বাচনের একটি আবহ বিরাজ করছে। ভোট আমাদের দেশে উৎসব। ভোটাররা উন্মুখ হয়ে থাকে তাদের এই নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করার জন্য। সে জন্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
পৌর নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকলেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংঘাত-সংঘর্ষের খবর আসছে। নির্বাচন যতো কাছে অাসবে ততোই নানা রকম অপতৎপরতা বাড়ার আশঙ্কা থাকছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলো নানা অভিযোগ করছে কমিশনে। একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমতল ক্ষেত্র নির্মাণের জন্য কমিশনের ওপর চাপ বাড়ছে। এটা নির্বাচন কমিশনের বিরাট দায়িত্ব।
৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ। এদিন সংঘাত সহিংসতার আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি। কোনো প্রার্থী বা দল যেন কিছুতেই প্রভাব বিস্তার করে ভোটের স্বাভাবিক পরিবেশকে বিনষ্ট করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে জনসাধারণের ভোটাধিকার রক্ষা করা। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার পক্ষপাতমূলক আচরণ ও শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই। দেশের সর্বস্তরের মানুষ নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী দেখতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচন তো বটেই গণতন্ত্রকে সুসংহত করা এবং দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্যও একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন মানুষের প্রত্যাশার মূলে। দেখা যাক পৌর নির্বাচনের পরীক্ষায় কমিশন এ ব্যাপারে কী ভূমিকা নেয়।
এইচআর/এমএস