প্রতিশ্রুতিতে জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা
৩০ ডিসেম্বরের পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা। ভোর শেষে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ, পথসভা। সেই সঙ্গে দেয়া হচ্ছে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।
জানা যায়, ১৯৫৮ সালের প্রায় ১৬ বর্গমি. আয়তন নিয়ে ১২টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয় ঠাকুরগাঁও পৌরসভা। পরে ১৯৯৮ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় রূপ নেয়। এ পৌরসভার অধিকাংশ মানুষই পেশায় ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবী।
পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পৌর এলাকার রাজপথ, পাড়া-মহল্লার অলি-গলি সবখানেই শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার।
পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে মেয়র প্রার্থীরা দিন-রাত ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে। তবে প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে নেই সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। ভোটের আশায় বিরামহীনভাবে তারাও ছুটছেন ভোটারদের কাছে। চাইছেন ভোট আর দিচ্ছেন পৌরবাসীর উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ‘নৌকা’ প্রতীকে লড়ছেন জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক তাহমিনা আক্তার মোল্লা ও বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে লড়ছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘মোবাইল ফোন’ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন সোলায়মান আলী সরকার, ‘নারিকেল গাছ’ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মাহাফুজুল ইসলাম। তবে স্থানীয়রা বলছেন মূলত লড়াইটা হবে ‘নৌকা’ আর ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাহমিনা আক্তার মোল্লা বলেন, আমি ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছি। তারা আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দিচ্ছেন। আমি আশা করছি নির্বাচনে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো। আমি নির্বাচিত হলে সকলের সহযোগিতা নিয়ে এমন একটি আধুনিক পৌরসভা গঠন করবো যাতে করে দেশের বাকি পৌরসভাগুলোর কাছে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা অনুকরণীয় হয়ে থাকে।
তবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মির্জা ফয়সল আমিন অভিযোগ করে বলেন, আমার পক্ষে কর্মী-সমর্থকরা প্রচার-প্রচারণা চালাতে গেলেই তাদের যৌথ বাহিনীর ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তবে নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন।
তবে ভোটররা বলছেন, প্রার্থীরা যত প্রতিশ্রুতিই দিক না কেন এবার দলীয় প্রতীক দেখে নয় সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন তারা।
ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার কয়েকজন ভোটার বলেন, ভোটের আগে অনেকেই উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চান। কিন্তু ভোট দিয়ে নির্বাচনে তাদের বিজয়ী করার পর আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই এবার শুধু প্রার্থীর দলীয় প্রতীক দেখেই নয় বরং যিনি সৎ ও যোগ্য এবং প্রকৃতপক্ষেই পৌরবাসীর উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করবেন তাকেই ভোটের মাধ্যমে মেয়র নির্বাচিত করবেন তারা।
তবে কে ধরছেন ঠাকুরগাঁও পৌরসভার হাল কিংবা কে হচ্ছেন পৌরসভার পরবর্তী মেয়র তা জানতে ভোটার ও প্রার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ১২টি ভোটকেন্দ্রে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পৌর এলাকার মোট ভোটার সংখ্যা ৫২ হাজার ৯৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৬ হাজার ৩৮৫ জন ও নারী ভোটার ২৬ হাজার ৪৪৫ জন।
রবিউল এহসান রিপন/এসএস/এমএস