প্রার্থী হওয়া যার নেশা


প্রকাশিত: ১০:৪৫ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫

ভোট এলেই তিনি প্রার্থী হন। গত ১৩ বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে চার-চার বার প্রার্থী হয়েছেন তিনি। এর মধ্যে দুইবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। তবে দুটি পৌরসভা নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি। এবারো পৌর নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। তার আশা এবারো বিজয়ী হবেন।

তবে সাধারণ ভোটাররা বলছেন অন্যকথা। গত উপজেলা নির্বাচনে পৌরবাসীর কাছ থেকে তিনি দোয়া নিয়ে বিদায় হয়েছিলেন। বলেছিলেন আর কখনো তিনি পৌরসভায় ভোট করবেন না। কিন্তু উপজেলায় পরাজিত হবার পর আবারো তিনি পৌরসভায় প্রার্থী হয়েছেন। এ জন্য ভোটাররা এবার তার ওপর অনেকটায় অখুশি। ভোট পাগল এই মানুষটি হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভার বিএনপি দলীয় মেয়র পদপ্রার্থী মতিয়ার রহমান মতিন। অন্যান্য বার বিভিন্ন মার্কা পেলেও এবার তিনি দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে লড়ছেন।

২০০২ সালে গঠন করা হয় শিবগঞ্জ পৌরসভা। তখন তিনি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এজন্য তাকেই পৌরসভার প্রথম প্রশাসক নিযুক্ত করা হয়। এরপরেই আসে ২০০৩ সালের প্রথম পৌরসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনে মতিয়ার রহমান মতিন ছয় হাজার ৪৫৩ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

এরপর ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হন। সে সময় তিনি দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মীর শাহে আলমের কাছে ১৭ হাজার ভোটে পরাজিত হন। এরপর মতিয়ার রহমান মতিন ২০১১ সালে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আবারো বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। সেবার তিনি মাত্র ১৬০০ ভোটে জয়লাভ করেন।

গত ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে তিনি আবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী হন। সেই নির্বাচনে মতিয়ার রহমান মতিন প্রায় ১৩ হাজার ভোটে জামায়াত-সমর্থিত প্রার্থী আবু নছর মাওলানা আলমগীর হোসাইনের কাছে পরাজিত হন। এবার পৌর নির্বাচনে মতিয়ার রহমান মতিন আবার বিএনপি দলীয় প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। এটি তার পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতা জানান, ভোট এলেই তিন প্রার্থী হন। তা যে নির্বাচনই হোক না কেন। তিনি একাই বারবার প্রার্থী হওয়ায় নতুনরা সুযোগ পাচ্ছেনা। এবার বিএনপির তিনজন দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিল। কিন্তু দল তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। এজন্য বিক্ষুব্ধ হয়ে একনেতা বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।

পৌরসভার তেঘড়ি এলাকার ভোটার আব্দুল গফুর বলেন, ভোটের বাক্স পেলেই তিনি প্রার্থী হন। গত কয়েকটি নির্বাচনে তাকে ভোট দিয়েছি। এবার আর নয়। এবার পরিবর্তন চাই। এজন্য তাকে বাদ দিয়ে অন্য প্রার্থীকে ভোট দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  

নির্বাচনে বারবার প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে মতিয়ার রহমান মতিন বলেন, দল বারবার মনোনয়ন দেয়ায় প্রার্থী হতে হয়। তাছাড়া ভোটারাও আমাকে চান এজন্যই প্রার্থী হই। আমার ডিমান্ড যতদিন থাকবে ততদিন প্রার্থী হয়েই যাবো।  

লিমন বাসার/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।