‘ভারত-বাংলাদেশ মিলিতভাবে এ দেশ সৃষ্টি করেছে’
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘ভারত এবং বাংলাদেশ মিলিতভাবে এ দেশ সৃষ্টি করেছে। আজকে বাংলাদেশের অগ্রগতির সাথে ভারতের অগ্রগতি জড়িত। তাই যারা স্বাধীনতার শত্রু, ভারতের শত্রু তারা বাংলাদেশেরও শত্রু।’
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলার বিজয় উৎসবে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতি।
মৈত্রী সমিতির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অ্যামিরেটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার, ভারতীয় দূতাবাসের প্রথম রাজনৈতিক ও তথ্য বিষয়ক সচিব শ্রী রাজেস উইকি এবং মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি জঙ্গি সৃষ্টি হয় কিংবা উগ্রবাধীদের তৎপরতার শুরু হয় তবে এ থেকে ভারতও মুক্তি পাবে না। তাই আজকে সম্মিলিতভাবে এ অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে হবে।’
আমু বলেন, ‘আজকে আমাদের চিহ্নিত করা হয় ভারতের দালাল হিসেবে, তার কারণ কি? যারা স্বাধীনতার শত্রু, যারা ভারতের শত্রু তারা বাংলাদেশেরও শত্রু। তারাই আমাদের ভারতের দালাল বলে থাকে। তাই আজকে সম্মিলিতভাবে এ অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত অস্ত্র দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছিল। এমনকি তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধী বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য দুই দুই বার বিশ্ব সফর করেছেন। সে সময় ভারত বাংলাদেশের সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছিল।’
যারা এ দেশকে কখনো মেনে নিতে পারেনি তারা জাতির জনককে হত্যা করেছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা এ দেশকে কখনো মেনে নিতে পারে নি। এ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বরণ করতে পারেনি বলে বঙ্গবন্ধুর হত্যার মধ্য দিয়ে এ দেশকে নব্য পাকিস্তানে রূপান্তরিত করার চক্রান্ত করেছে। এমনকি সে সময়ের সরকাররা ২১টি বছর কাজ করেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করার জন্য। এবং বাংলাদেশের যে মানচিত্রটি মুজিব-ইন্ধিরা চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছিল এটির দিকে পর্যন্ত কোন ধরণের নজর দেননি তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি গণহত্যাকারীদের ন্যায় বর্তমান সময়ের অপশক্তির লালনকারী, আন্দোলনের নামে পেট্রল বোমা মেরে মানুষ হত্যাকারীদেরও বিচার করা হবে। তারা ষড়যন্ত্র করে পেট্রোল বোমার মাধ্যমে। তারা অবরোধের ডাক দিয়েছিল কিন্তু তাতে অবরোধের তেজ ছিল না ছিল, পেট্রোল বোমার তেজ।’
বিজয় দিবসের উৎসবে সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়ে শ্রী রাজেস উইকি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে মৈত্রী সর্ম্পকের তৈরি হয়েছে তা আগামীতেও অটল থাকবে।’ এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের ১১ হাজার শহীদ যোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের প্রতিদান দেয়া যায় না। আমরা মৈত্রী সমিতির রক্ত দানের মাধ্যমে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শহীদদের স্মরণে বিজয়ের মাসে আমাদের এ রক্তদান।’ এরপর প্রধান অতিথিসহ অনুষ্ঠানের অতিথিরা রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এমএইচ/এসকেডি/আরআইপি