সবার মনে বিজয়ের উল্লাস : শুধু ওরা উপবাস
গোটা জাতি বিজয়ের আনন্দে উদ্ভাসিত, ঠিক সেই মহাখুশির দিনে কষ্টে উপবাস করে দিনটি কাটালেন ওরা। গত এক বছর পরেও ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে বিজয় দিবসের পরিবর্তে উপবাস দিবস পালন করলেন রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরের বুড়িঘাট বগাছড়ির ১৪ মাইলে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরের পাহাড়ি লোকজনেরা।
ঘটনার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে বুধবার অগ্নিদ্বগ্ধ বগাছড়ির চৌদ্দমাইল পাহাড়ি এলাকার সুরিদাশপাড়ার করুণাপুর বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী ‘উপবাস’ কর্মসূচি পালন করেছেন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি পরিবারের লোকজন। কর্মসূচিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিশুসহ প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
সুরিদাশপাড়ার রাম কারবারির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিল চাকমা, নারীবাদী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী মন্টি চাকমা, নানিয়ারচরের ঘিলাছড়ির অমর জীবন চাকমা প্রমুখ।
এ বক্তারা সরকারের কাছে অবিলম্বে ওই অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদ, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হবেন বলে হুমকি দেন তারা।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের বগাছড়ির চৌদ্দমাইলে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে তিনটি পাহাড়ি গ্রামের প্রায় অর্ধ-শতাধিক বসতবাড়ি পুড়ে যায়। জেলা প্রশাসনের তালিকায় হিসাব নিরূপণ করা হয়েছে দোকানসহ ৬১টি বসতবাড়ি। এর আগের রাত ১৫ ডিসেম্বর একই এলাকায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা সেখানকার স্থানীয় সেটেলার বাঙালিদের আনারস বাগানের চারা কেটে ফেলার জেরে পরের দিন অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করে স্থানীয় পাহাড়ি ও সেটেলার বাঙালিরা। তবে ওইদিন সকালে পাহাড়িদের বাড়িঘরে প্রকাশ্যে আগুন ধরিয়ে দেন সেটেলার বাঙালিরা।
সুশীল প্রসাদ চাকমা/এআরএ/পিআর