চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা
একেই বলে টি-টোয়েন্টির ফাইনাল। প্রতিটি পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকবে উত্তেজনা। শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ। নাটকের চেয়েও নাটকীয়। ক্লাইমেক্স আর অ্যান্টি ক্লাইমেক্সে ভরপুর সেই নাটকীয়তা। শেষ পর্যন্ত সেই শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বরিশাল বুলসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দিয়ে বিপিএল তৃতীয় আসরের শিরোপা জিতে নিলো মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
শেষ দুই ওভারে রান প্রয়োজন ২৩। পর পর দুই বলে স্টিভেন্স আর মাশরাফির উইকেট হারানোর ফলে কুমিল্লার হারই ধরে নিয়েছিল সবাই। পরের বল ডট। এরপর এলো দুই রান। শেষ দুই বলে পরপ দুটি বাউন্ডারি মেরেই ম্যাচে চরম নাটকীয়তা জমিয়ে দিলেন অলক কাপালি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৩ রান। প্রথম বলেই রান আউট শুভাগত হোম। ক্লাইমেক্স জমলো আরও বেশি। কিন্তু কুলাসেকারা এসে ১ রান নিয়েই দিলেন অলক কাপালিকে। পরপর দুটি বাউন্ডারি মেরে কুমিল্লাকে জয়ের ধারপ্রান্তে নিয়ে আসেন অলক কাপালি। পঞ্চম বলে ২ এবং শেষ বলে ১ রান নিয়ে কুমিল্লাকে স্বপ্নের শিরোপা জয় নিশ্চিত করে দিলেন কাপালি।
পুরো বিপিএলের চিত্র বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, ১৫৬ রানের ইনিংসটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে রাতের ম্যাচে তো আরও বেশি। ফাইনালের মতো ম্যাচে এসে যখন বরিশাল বুলস কুমিল্লার সামনে ১৫৬ রানের ইনিংস দাঁড় করিয়ে দেয়, তখন তাকে তো চ্যালেঞ্জিং বলতেই হবে। এই রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
পুরো টুর্নামেন্টেই ফ্লপ ছিলেন লিটন কুমার দাস। ফাইনালেও পারলেন না জ্বলে উঠতে। ৬ বল মোকাবেলা করে মাত্র ৩ রান করে আউট হয়ে গেলেন কুমিল্লার এই ওপেনার। পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামির বলে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান লিটন। দলীয় রান তখন ২.৫ ওভারে ২৩।
লিটন আউট হয়ে গেলেও বিপর্যয় সৃষ্টি হতে দেননি ইমরুল কায়েস এবং আহমেদ শেহজাদ। পাকিস্তানি শেহজাদ একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে গেলে তো আর কারও রক্ষা নেই। অনেক বড় স্কোরও পাড়ি দিতে পারেন তিনি। তো শেহজাদের ব্যাটে অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৫৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলার পর অবশ্য আউট হয়ে যান শেহজাদ। দলীয় রান তখন ছিল ৭৭। ২৪ বলে ৩০ রান করেন তিনি।
তবে কুমিল্লার হয়ে আসল কাজটা করলেন ইমরুল কায়েসই। ফাইনালের মতো মঞ্চে হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেন ইমরুল। ৩৭ বলে ৫৩ রান করে আউট হয়ে যান কুমিল্লার অধিনায়ক। ৬টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি। দলীয় ৯২ রানের মাথায় আউট হন ইমরুল।
দলকে জয়ের পথে নিয়ে এসে ইমরুল আউট হয়ে গেলেও আশা ছিল আসহার জাইদির ওপর। কিন্তু ১৬তম ওভারে দুর্ভাগ্যক্রমে রানআউট হয়ে গেলে বিপদে পড়ে যায় কুমিল্লা। তবুও আশা ছিল অলক কাপালি, স্টিভেন্স, মাশরাফি কিংবা শুভাগত হোমরা তখনও বাকি ছিলেন।
কিন্তু বরিশাল বুলস বোলারদের খুব টাইট বোলিং, ধীরে ধীরে ম্যাচকে তাদের দিকেই ঝুঁকিয়ে দেয়। অলক কাপালির কিছু বল মিস করা, মাশরাফির শূন্য রানে আউট হয়ে যাওয়া ম্যাচ পুরো নাটকীয় রূপ দান করে।
আইএই্চএস/বিএ