সিলেটে ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে সশস্ত্র মহড়া


প্রকাশিত: ০১:২৯ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৫

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে প্রত্যাখান করে পদবঞ্চিতদের ঝাড়ু মিছিলের একদিনের মাথায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে নেতাকর্মীরা।

এর আগে জেলা কমিটি বাতিল চেয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিলেটে ছাত্র ধর্মঘট পালন করে পদবঞ্চিত তৃর্ণমূল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ধর্মঘট শেষ হওয়ার পরপরই জেলা ছাত্রলীগ অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে এই মহড়া দিলো। এতে করে নগরবাসীর মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হজরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত এবং সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।  

পরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীর নেতৃত্বে নগরীতে পৃথক দুটি  মিছিল বের হয়। এ সময় মিছিলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ গঠিত হয়। কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের একাংশ এবং তাদের অনুসারীরা হজরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেন এবং শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

পরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের নেতৃত্বে একটি মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তালতলায় গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের হাতে দেশিয় অস্ত্র বহন করতে দেখা যায়।

এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীর নেতৃত্বে টিলাগড়ে আরেকটি মিছিল হয়েছে। ওই মিছিলে নেতাকর্মীদের হাতেও ধারালো দেশিয় অস্ত্র ছিল।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীর নেতৃত্বে এভাবে প্রকাশ্যে ধরালো অস্ত্র নিয়ে মহড়ার ঘটনায় সচেতন মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ওই মহড়ার সময় নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে কোনো ধরনের বি-শৃঙ্খলা দেখা না দেয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সাধারণ পথচারীরা।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

Shodown
অন্যদিকে, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে ছাত্র ধর্মঘট পালন করেন সংগঠনের একাংশের নেতারা। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সিলেটের বিভিন্ন কলেজে অবস্থান নিয়ে তারা এ ধর্মঘট পালন করেন বলে জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব কান্তি দাস। বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট পালন করা হয়।

বিপ্লব কান্তি দাস জানান, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়ে ঘোষিত দুইদিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ছাত্র ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। এমসি কলেজ, সরকারি কলেজ, মদনমোহন কলেজ ও দক্ষিণ সুরমা কলেজসহ সিলেট জেলার সকল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অবস্থান নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্র ধর্মঘট সফল করেন।

প্রসঙ্গত, নবগঠিত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে সোমবার বিকাল ৩টায় নগরে রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে ঝাড়ু মিছিল শুরু হয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশ করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে শিবির, ছিনতাইকারী, ছাত্রদল, অছাত্র ও বিবাহিতদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

সমাবেশ থেকে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সিলেটের সকল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্র ধর্মঘট ও বুধবার সকল উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ঝাড়ু মিছিলে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম নিজাম উদ্দিন, সহ-সভাপতি হোসাইন আহমদ চৌধুরী, ছয়েফ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদার হোসেন সাজু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব কান্তি দাস, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মওদুদ আহমদ আকাশ ও গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কনকপাল অরূপের নেতৃত্বে তৃণমূল ছাত্রলীগের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।