এনজিওকে সরকারি হাসপাতালের দায়িত্ব দেয়া জনবিরোধী : ন্যাপ
দেশের সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এনজিওর হাতে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। দলটি বলেছে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী এবং দেশের জন্য মারাত্মক খারাপ দৃষ্টান্ত, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই সিদ্ধান্ত অবৈজ্ঞানিক ও অজ্ঞতাপ্রসূত। জনস্বার্থ বিরোধী এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যয় আরও বাড়বে, যা সাধারণ জনগণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। সেবা তো বাড়বেই না বরং সরকারি স্বাস্থ্য খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
শনিবার (২৬ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘এনজিওর হাতে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা প্রদান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাস্থ্য খাতে সক্ষমতার অভাব রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। এবং সরকারি দলের দুর্নীতির কারণে। জনগণের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব রাষ্ট্রের তথা সরকারের। কিন্তু সরকার বা রাষ্ট্র তার দায়িত্ব অস্বীকার করে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার দায়িত্ব সাম্রাজ্যবাদের অর্থায়নে পরিচালিত এনজিওর কাছে হস্তান্তর করা মানে বাস্তবে জনস্বাস্থ্যকে একটা বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়া।’
তারা বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে আগেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, সে ক্ষেত্রে সেবার মান তো বাড়েনি বরং সেবা পেতে মানুষকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। মূলত সংসদে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি বেড়ে যাওয়ায় এবং স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পদে প্রশাসন কর্মকর্তাদের পদায়নের প্রচ্ছন্ন মনোবাসনা থেকে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।’
নেতারা বলেন, ‘বর্তমানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে চিকিৎসাসেবা পরিচালিত হওয়ার পরও ‘আউট অব পকেট এক্সপেনডিউচার’ সবচেয়ে বেশি। সেখানে ব্যবস্থাপনা এনজিওর হাতে গেলে এই ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাবে। চিকিৎসা ব্যয় এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে, শুধু দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেই নয়, নিম্নমধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদেরও চিকিৎসাসেবা নাগালের বাইরে চলে যাবে।’
তারা বলেন, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত যদি সত্যিকারের অর্থেই কল্যাণকর হতো তা হলে পৃথিবীর সব রাষ্ট্রেই এনজিওগুলো সরকারি হাসপাতাল পরিচালনা করতো। এ ধরনের জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত মূলত আমলাতন্ত্রের একটি সুদূরপ্রসারী চিন্তা। প্রথমে তারা এনজিওর হাতে ব্যবস্থাপনা দেবে, এতে এনজিওগুলো চূড়ান্তভাবে অকৃতকার্য হবে। তারপর তারা সব হাসপাতালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তা নিয়োগ করবে।’
অবিলম্বে এমন সিদ্ধান্ত বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ‘বর্তমান আমলা-ব্যবসায়ী নির্ভর সরকার স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ না বাড়িয়ে, দক্ষ জনবল নিয়োগ না দিয়ে দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ না করে জনসম্পৃক্ততার ভূঞা আওয়াজ তুলে অবৈজ্ঞানিক ও বাস্তবতাবর্জিত সিদ্ধান্ত নিয়ে জনস্বাস্থ্যকে মুনাফালোভীদের কাছে ছেড়ে দিতে চাইছে, যা চরমভাবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। যার মাসুল গুণতে হবে দেশের জনগণকে।’
কেএইচ/ইএ/এমএস