শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো পিএসসি পরীক্ষা
এবার প্রশ্নফাঁস ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে প্রাথমিক ও এবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (পিসএসসি) পরীক্ষা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কৌশলী সিদ্ধান্ত এবং কঠোরতার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। তবে এ বছর পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতির সংখ্যা বেড়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রতিবছর পিএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠায় এবার ৩২ সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়। এর মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে ৮ সেট প্রশ্ন কঠোর নিরাপত্তায় বিজি প্রেস থেকে ছাপানো হয়। ৬৪ জেলাকে ৮টি জোনে ভাগ করে পৃথক আট সেট প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইসঙ্গে পরীক্ষা তদারকি করতে ৬৪টি জেলাকে ২৯টি ভাগ করে মন্ত্রণালয়ের ২৯ কর্মকর্তাকে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। এ কারণে এবার প্রশ্নফাঁস হয়নি বলে মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন।
জানা গেছে, গত ২২ নভেম্বর ইংরেজি পরীক্ষা দিয়ে শুরু এবং সোমবার বাংলা পরীক্ষা দিয়ে শেষ হয়েছে। পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে জামায়াতের ডাকা হরতালের কারণে বাংলা পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তা না হলে ২৯ নভেম্বর পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। সারাদেশে ৭ হাজার ৫২টি কেন্দ্রে এবং দেশের বাহিরে ১১টি কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত পরীক্ষা নেয়া হয়। এবার ৩২ লাখ ৫৪ হাজার ৫১৪ জন পরীর্ক্ষার্থী অংশ নেয়ার জন্য নিবন্ধন করে এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৩৩ জন অংশ নেয়নি। গত বছর ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ৩২১ জন নিবন্ধন করে এক লাখ ৪৩ হাজার ৪৪০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়নি। এ হিসেবে এ বছর পরীক্ষায় অনুপস্থিতির সংখ্যা বেড়ছে ৯ হাজার ৮৯৩ জন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সাল থেকে চালু হওয়ার পর থেকেই পিএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। গত বছর তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। পরীক্ষার আগের রাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজেশন আকারে প্রশ্ন ছড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। অনেক শিক্ষক, অভিভাবক ও কোচিং সেন্টারের মালিকরা তা সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন। পরীক্ষা শেষে প্রকাশিত সাজেশনের সঙ্গে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মিলে যায়। এ নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. জাফর ইকবাল একাধিক কলাম লিখেন। পিএসসি পরীক্ষা তুলে দেয়ারও দাবি জানান অনেকে। এরপরই প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে উপায় খুঁজে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষামন্ত্রণালয়। ২০১৮ সাল থেকে পিএসসি পরীক্ষা তুলে দেয়ারও চিন্তা-ভাবনা চলছে।
এনএম/এসএইচএস/পিআর