পাট শিল্পের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সকলকে কাজ করতে হবে
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, পাট শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। সরকার সপ্তম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনায় বাংলাদেশের প্রচলিত রফতানি পণ্যের পাশাপাশি আইসিটি, ওষুধ, ফার্নিচার, জাহাজ, চামড়া ও পাটজাত পণ্য রফতানি বৃদ্ধি করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রফতানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। রফতানি বাজার সম্প্রসারণের জন্য যে সকল খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে তার মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য অন্যতম।
বাণিজ্যমন্ত্রী রোববার ঢাকায় জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার-এর সম্মেলন কক্ষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’-এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আইন মোতাবেক ধান, চাল, গম, ভূট্টা, সার এবং চিনি এ ছয়টি পণ্য পাটজাত মোরকের যে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, তা খুবই সময়পযোগী। সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ আইন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের পাট শিল্পকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, পাটজাত পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন আমদানি ও রফতানি অফিসকে এ আইন বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সার কারখানা, চিনিকল ও রিফাইনারি কোম্পানি, চাল-আটা কলসহ সংশ্লিষ্ট সর্বক্ষেত্রে পাটজাত পণ্য ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাটের ব্যবহার বাড়লে দেশের কৃষকগণ বেশি করে পাট উৎপাদনে উৎসাহিত হবে, দেশ হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিগত বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে পাট শিল্পকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের বড় বড় পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক মানুষ চাকরিচ্যুত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার পাটের বহুমূখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সেক্টরের সহযোগিতা প্রয়োজন।
পাট উৎপাদন বৃদ্ধি এবং জাতীয় অর্থনীতিতে পাট সম্পদের ভূমিকা বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্য বাংলাদেশের বড় রফতানি খাত হতে পারে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, এমপি সভায় সভাপতিত্ব করে বলেন, দেশের পাট সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল খাতের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। আইনটির প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ৩০ নভেম্বর সপ্তাহব্যাপী সড়ক, মহাসড়ক, চাল উৎপাদনকারী এলাকাসহ ঢাকার প্রবেশ মুখ এবং সমগ্র দেশে স্বরাষ্ট্র, পরিবেশ ও বন, নৌপরিবহন, সড়ক পরিবহন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পাট অধিদফতর, পরিবেশ অধিদফতর, স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ব্যারেব সহযোগিতায় এক সাথে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, বিভন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং পাট ও পাটজাত পণ্য ব্যবহার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাগণ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তাগণ আইন মোতাবেক পাটজাত পণ্য ব্যবহার বৃদ্ধির পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন।
এসএ/একে/পিআর