খতিয়ান ধরে ঘরে ঘরে ঢুকে বিচার করা হবে : আলাল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, সরকারের কে, কোথায়, কবে, কী দুর্নীতি করেছে, সব দলিলপত্র রাখা আছে। এটা যদি সিএস খতিয়ান, আরএস খতিয়ান হয়ে যায়। এসএ খতিয়ান ধরে ঘরে ঘরে ঢুকে বিচার করা হবে ইনশাল্লাহ।

সোমবার (১৫ ফেব্রয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব ‘বীর উত্তম’ বাতিলে সরকারের উদ্যোগের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘একটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই- এই মাফিয়া চক্র, এদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। পুলিশের কোন সর্বোচ্চ কর্মকর্তার কোথায় রিসোর্ট আছে, কোথায় আমোদ-প্রমোদ করে। কোথায় বসে কুকীর্তি করে। সবকিছুর ডকুমেন্ট আমাদের কাছে আছে। কোন সরকারি কর্মকর্তা, কোন সচিব কোথায় বসে সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে রঙ্গলীলা করে সব ভিডিও আমাদের কাছে আছে।’

তিনি বলেন, ‘যার যেটা নেই, সে নাকি সেটাই হতে চায়। আওয়ামী লীগের চৌদ্দগোষ্ঠীর মধ্যে হাজার পাওয়ারের লাইট জ্বালিয়েও একজন বীর প্রতীক খুঁজে পাওয়া যাবে না। বীর উত্তম তো অনেক দূরের কথা। এখন নেই বলেই জিয়াউর রহমানকে খাটো করবেন? জনগণ তা মেনে নেবে না।’

jagonews24

আলাল আরও বলেন, ‘আমার আগের বক্তা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেছেন- আন্দোলনটা একটু জোরেশোরে করলে এরা (আওয়ামী লীগ) পালিয়ে যাবে। এই কথার পরে আমি একটু চিন্তায় পড়ে গেছি। তারা পালিয়ে যাবে কোথায়? বিজেপি নেতা অমিত সাহা পশ্চিমবঙ্গ এসে বলে গেছেন- পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে বাংলাদেশ থেকে একটি পাখিও নাকি ঢুকতে পারবে না। তো পাখিরা যদি না ঢুকতে পারে। তাহলে এই মাসিরা পিসির বাড়িতে যাবে কিভাবে? এই মাসিদের পিসির বাড়ি যাওয়া যখন বন্ধ হবে, তখন জনগণ এদেরকে ঘেরাও করবে। আর সেই ঘেরাওয়ের নেতৃত্ব দিতে হবে বিএনপিকে। এর বাইরে আর কোনো পথ নেই।’

জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের উদ্যোগ প্রসঙ্গে আলাল বলেন, ‘কোন জায়গায় হাত দিয়েছেন বুঝতে পারেননি। বাংলাদেশের মানুষের হৃদযয়ে হাত দিয়েছেন। দেশের মানুষের হৃদপিণ্ডে হাত দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের মন্ত্রিসভায় এমন লোকও আছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ছয় বছর। তাকেও মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। এই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় খালেদা জিয়ার পবিত্র হাতে সৃষ্টি, আপনারা করেননি। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে বলে চোখের পানি, নাকের পানি এক করে ফেলেন। আপনাদের মনে ছিল না কেনো মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় করেননি। কেনো বেগম খালেদা জিয়ার মুখ দিয়ে ঘোষণা করতে হলো?’

jagonews24

আলাল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরে নারীর সম্ভ্রম হরণের কারণে হুমায়ূন আহমেদ যাকে নিয়ে বই লিখেছিলেন, এই হচ্ছে সেই কুখ্যাত আ ক ম মোজাম্মেল হক। যে বইয়ের একাংশ নিষিদ্ধ করেছে এই সরকার। হুমায়ূন আহমেদের সেই বইয়ের নাম হচ্ছে দেয়াল। যদি আসল কপিটা কেউ পান, তাহলে পড়ে দেখবেন। এই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সকল কুকর্মের কথা লেখা আছে। সেই মোজাম্মেল মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী হয়ে রাজাকারদের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা, মৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধার পরিবারদের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। এই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার।’

পুলিশের উদ্দেশ্যে যুবদলের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘আপনাদের ইউনিফর্ম ও ব্যাচের মধ্যে আওয়ামী লীগ পুলিশ লেখা নেই, বিএনপির পুলিশও লেখা নেই। আপনাদের ইউনিফর্মে লেখা আছে- বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। আপনারা পথভ্রষ্ট হবেন না। খোঁজ নিয়ে দেখেন আপনাদেরই আত্মীয়দের মধ্যে কেউ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর কত নির্যাতন করবেন? আর কত মামলা দিবেন? আপনাদের কলমের কালি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। বিজয় ছিনিয়ে না আনা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডাক্তার দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাফের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।

কেএইচ/এএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।