সংস্কৃতিকে দ্বিখণ্ডিত করা সম্ভব নয়
‘দুই বাংলাকে রাষ্ট্র হিসেবে দ্বিখণ্ডিত করা সম্ভব হলেও সংস্কৃতিকে দ্বিখণ্ডিত করা সম্ভব নয়। কারণ চলচ্চিত্র মানুষের কথা বলে।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আয়োজনে সপ্তাহব্যাপি ‘দুই বাংলার চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৫ ’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রকার নাসির উদ্দীন ইউসুফ এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিনেমাটোগ্রাফার আনোয়ার হোসেনকে উল্লেখ করে বলেন, তার সাদাকালো ছবিতে সোনারং দেখতে পেয়েছি। এ ধরনের উৎসব অব্যাহত রাখার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রে ও ফটোগ্রাটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য যথাক্রমে ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোগ্রাফার আনোয়ার হোসেনকে আজীবন সম্মননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বুদ্বদেব দাশগুপ্ত তার বক্তব্যে এই উৎসব আয়োজন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকার মানজারেহাসীন মুরাদ বলেন, যেকোনো বিষয় শুরু হওয়ার আগে একটা সাম্যের প্রয়োজন হয় যেটা এই দুই বাংলার মধ্যে রয়েছে। এই উৎসবের মাধ্যমে দুই বাংলার মধ্যে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উৎসবে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি জায়গা যেখানে সব ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে এখন আগের চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলছে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, রাজশাহী চ্যাপ্টারের বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি প্রফেসর আবদুল খালেক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান ও ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার মি. সন্দীপ মিত্র। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গণভ্যুত্থানে নিহত ড. শামসুজ্জোহার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন কর হয়।
এর আগে সকাল ১০টায় এ উৎসবের উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নন্দিত ভারতীয় চলচ্চিত্রকার বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ও ‘গেরিলা’ চলচ্চিত্রখ্যাত বাংলাদেশি চলচ্চিত্রকার নাসির উদ্দীন ইউসুফ। পরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদিক্ষণ করে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়।
সপ্তাহব্যাপি এ উৎসবে দুই বাংলার খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকারদের নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য মিলিয়ে ২০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। সেমিনার, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ সকল অনুষ্ঠান সকল দর্শক-শ্রোতার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
রাশেদ রিন্টু/এমজেড/বিএ