শেখ মুজিবের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হওয়া উচিত : তারেক
শেখ মুজিবুর রহমানের নামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের আট্রিয়াম হলে বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখা আয়োজিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
সভায় তিনি বলেন, প্রকৃত ইতিহাস বলার কারণে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ মামলা হওয়া উচিত শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। কারণ, তিনি পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে এসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ইতিহাসভিত্তিক কিছু তথ্য দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে তিনি তুলে ধরেছেন। তার প্রতিটি বক্তব্য ছিলো তথ্যভিত্তিক। অথচ এই অভিযোগে তার (তারেক রহমান) বিরুদ্ধে নাকি দেশদ্রোহী মামলা দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, শেখ মুজিব ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, ২৫ মার্চও দেননি বরং তাজউদ্দিন আহমেদ তাকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার আহবান জানালে তিনি তাজউদ্দিন আহমেদকে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেন।
তারেক রহমানের দাবি করেন, তার বাবা জিয়াউর রহমান শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক কিংবা প্রথম রাষ্ট্রপতিই ছিলেন না, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্টও ছিলেন। জিয়াউর রহমান জোর করে ক্ষমতা দখল করেননি এবং জাতীয় চার নেতা হত্যার সঙ্গে তার বাবার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।
স্থানীয় সরকারবিষয়ক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জেলহত্যার সঙ্গে জিয়া জড়িত বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরাই জেলহত্যা দিবস পালন করে ৩ নভেম্বর। ওই হত্যাকাণ্ডের আগের দিন ২ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে সেনানিবাসের বাসায় গৃহবন্দী করেছিলেন।
বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে ‘জঙ্গি ইনু’ আখ্যায়িত করে তারেক রহমান বলেন, এই ইনু বাহিনী ১৯৭৫-এ শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পটভূমি তৈরি করেছিল এবং পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল। সে কাজে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন মিথ্যাচার ও ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে জিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
তারেক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আগস্ট থেকে নভেম্বর -এই কয়েকটি মাস ছিল ঘটনাবহুল এবং বিপৎসংকুল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনা, সেনাবাহিনীতে চলে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান, খালেদ মোশাররফসহ সেনা অফিসার হত্যা, তাহের-ইনু চক্রের ষড়যন্ত্র এবং সিপাহী-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থানের পথ ধরে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।
তারেক রহমান আরও বলেন, জিয়া ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেননি। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর খন্দকার মোশতাক এটি জারি করেছিলেন।