নীলনকশা বাস্তবায়নে সরকার পাটকল বন্ধ করেছে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করা হয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মাঝেও একদিকে চলছে সরকারের লুটপাট, অন্যদিকে চলছে বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিক ও কর্মহীন মানুষের আহাজারি।
বুধবার (২২জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঈদের আগে সব কারখানায় কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন-বোনাস পরিশোধ, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো খুলে দেয়া, সরকার ঘোষিত প্রণোদনার টাকা শ্রমিকদের প্রদান ও বিভিন্ন কলকারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
এ সময় রিজভী বলেন, মহামারি দুর্যোগেও বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল, সবজিসহ সব পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। তাহলে বোঝেন শ্রমিকের কী অবস্থা! গ্রামের মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। এই জন্যই আওয়ামী লীগ করোনার চেয়ে শক্তিশালী, যা তাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকল বন্ধ করায় সেসব কারাখানার শ্রমিকদের বাঁচার কোনো অধিকার থাকলো না। তাদের এখন মানবেতর অবস্থা। মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রফতানি বন্ধ। আজকে সরকারের একটি দফতরে একটি বটি কিনতে ১০ হাজার টাকা, একটা চামচ ১ হাজার টাকা, ল্যাপটপ কিনতে দাম দেখানো হচ্ছে ২ লাখ টাকা। এভাবে জনগণের টাকা লুটে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা আসলেই করোনার চেয়ে দুর্নীতি আর লুটপাটে শক্তিশালী।
রিজভী বলেন, পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এটা কেন করা হলো? উদ্দেশ্যে হলো লুটপাট। অথচ পাট দিয়ে ২০০টি পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব, যা বিশ্বে রফতানি করে বছরে বহু টাকা আয় করা যায়। কিন্তু সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী পাটকলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অসংখ্য মানুষ বেকার ও কর্মহীন হয়ে গেছে। অথচ সরকারের উচিত ছিল শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এগিয়ে আসা।
তিনি বলেন, সরকার কি শুধুই মহাজন, ধনী ও ব্যবসায়ীদের জন্য? কলকারখানা বাঁচানোর জন্য সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। আমি অবিলম্বে কোরবানির ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আজকে একদিকে রিজেন্ট জেকেজির লুটপাট, অন্যদিকে সরকারের দুঃশাসন ও নিরন্ন মানুষের আহাজারি। আজকে কোথায় সরকারের উন্নয়ন? সামান্য বন্যায় ভেসে যায় গরিব মানুষের বাড়ি-ঘর। ভেসে যায় গবাদিপশু ও ফসল। দেশের অধিকাংশ এলাকা বন্যায় তলিয়ে গেছে। আসলে সরকারের নজর উন্নয়নে নেই, তারা শুধু মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে নিজেদের লোকদের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত।
সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহশ্রম বিষয়ক হুমায়ূন কবির খান, ফিরোজ উজ জামান মামুন মোল্লা, মেহেদী আলী খান, মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার, মফিদুল ইসলাম মোহন, জুলফিকার মতিন সুমন ভুইয়া, আলহাজ্ব উদ্দিন প্রমুখ। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের মোর্শেদ আলম প্রমুখ অংশ নেয়।
কেএইচ/এমএসএইচ/পিআর