চিকিৎসার জন্য খালেদা কি লন্ডন যাচ্ছেন?
উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সরকারের অনুমতি মিললে ঈদুল আজহার আগেই তিনি বিশেষ ফ্লাইটে সেখানে যাবেন। বিভিন্ন সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বলা হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার ঈদের আগেই লন্ডন যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এজন্য তার এবং গৃহকর্মী ফাতেমার ভিসাও করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দর বিষয়টি নিয়ে সরকরের উচ্চ মহলে দেন-দরবার করছেন। সমঝোতা হলে ভাড়া করা ফ্লাইটে লন্ডনে যাবেন বিএনপি প্রধান।
গত ২৮ মে ভাড়া করা একটি ফ্লাইটে বিএনপির সাবেক শীর্ষনেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন মহলে জোরে-শোরে আলোচিত হচ্ছে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি হওয়ার আগে ২০১৭ সালে লন্ডনের একটি হাসপাতালে চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছিল খালেদা জিয়ার।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান কিছুদিন আগে সাউথ লন্ডনের উপকণ্ঠে টেমস নদীর পাশে ওয়ালটন এলাকার আগের বাসা ছেড়ে সম্প্রতি পাঁচ-ছয় রুমের নতুন একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) জাগো নিউজকে বলেন, ‘ম্যাডাম ও তার পরিবার তো উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে চাইবেন। কারণ মুক্তির উদ্দেশ্যই ছিল উন্নততর চিকিৎসা, সেটা তো সফল হয়নি। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে সরকারের মনোভাব তথা হিসাব-নিকাশের ওপর। সরকার চাইলে সব কিছু পারে। আমি মনে করি ম্যাডাম যদি যেতে চান, তবে বিশেষ বিমানে করে তাকে যেতে দেয়া উচিত।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার বলেন, এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় যেভাবে ম্যাডামের বিষয়ে খবর এসেছে, এগুলো পুরোপুরি মিথ্যা। আমাদের মধ্যে আলোচনা তো নেই, এমনকি পরিবার এখনো পরবর্তী কিছু নিয়ে আলোচনা করেননি।’
খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দরও গণমাধ্যমে প্রচারিত এমন খবর অস্বীকার করেছেন।
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে কিছু শুনিনি। তবে এটা তো ঠিক যে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা ভালো নয় এবং তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।’
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় সরকার। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না, এমন শর্তে সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির পর সেদিন গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় ওঠেন খালেদা জিয়া। এখন পর্যন্ত সেখানেই আছেন তিনি।
‘ফিরোজায়’ তিনি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে অন্তত তিনবার একান্ত আলাপ করেছেন। এছাড়া নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথেও তার বৈঠক হয়েছে। পাশাপাশি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীনের সাথেও টেলিফোনে কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।
কেএইচ/এইচএ/পিআর