বাগেরহাটে শেষ হলো সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা


প্রকাশিত: ০৮:২৬ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৫

ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনের পাশে কয়লা ভিত্তিক রামপাল ও ওরিয়ন গ্রুপের তাপ বিদুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে সিপিবি ও বাসদের ঢাকা-বাগেরহাট ‘সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা’ কর্মসূচি শনিবার দুপুরে বাগেরহাটে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।

গত ১৩ অক্টোবর বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে এই সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্র শুরু করে দল দু’টি। পাঁচ দিনব্যাপি সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রর চলমান কর্মসূচিতে ইতোমধ্যে দল দুুটি মানিকগঞ্জ, গোয়ালন্দ, ফরিদপুর, মধূখালী, মাগুরা, ঝিনাইদহ, যশোর, দৌলতপুর ও খুলনায় সমাবেশ করেছে।

সমাবেশ থেকে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই-পরিবেশবান্ধব জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করে তার সঠিক বাস্তবায়ন ও এই বনের পাশে রামপাল ও ওরিয়ন গ্রুপের দুটি কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদু কেন্দ্র নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন সিপিবি ও বাসদ নেতৃবৃন্দ। শনিবার দুপুরে বাগেরহাট পুরাতন কোট চত্বরে সিপিবি ও বাসদের ঢাকা-বাগেরহাট ‘সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা’ কর্মসূচির শেষ সমাবেশে দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতারা এই দাবি জানান।
 
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা কমরেড মঞ্জুরুল আহসান খান বলেন, আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র চাই তবে তা সুন্দরবনের কাছে নয়। সুন্দরবনের কাছে দুটি কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ এই বনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হবে। এই বন ধ্বংস হলে কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা ও বাসস্থান হারিয়ে উদ্বাস্তে পরিণত হবে। লাভ হবে এনটিসি কোম্পানিসহ এদেশের লুটেরাদের।

অবিলম্বে রামপাল ও ওরিয়ন গ্রুপের দুটি কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধসহ সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই পরিবেশবান্ধব জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করে তার সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে।
 
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান তার বক্তবে বলেন, সরকার লুটেরা ও বেনিয়াদের সুবিধা দিতে সুন্দরবন ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। সরকার পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে একদিকে সুন্দরবন ধ্বংসকারী দুটি কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ পরিবেশ বিষয়ক পুরস্কার গ্রহণ করছেন। যা স্ব বিরোধী। এই পুরস্কারের সম্মান রক্ষায় অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীকে এই দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের ঘোষণা দিতে হবে। তানা হলে এই পুরস্কার প্রধানমন্ত্রীর জন্য গলারকাটা হয়ে দাঁড়াবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সুন্দরবন রক্ষা করা আজ জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই অঞ্চল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল এ অঞ্চলের পাঁচ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে যাবে। কিছু সংখ্যক লোক তাপ বিদ্যুকেন্দ্রকে পুঁজি করে ব্যাবসা করে মুনাফা লুটে নিবে আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে সুন্দরবন ।

বাগেরহাট জেলা সিপিবির প্রবীণ নেতা শেখ সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য  রাখেন, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাজ্জাত জহির চন্দন, লক্ষ্মী চক্রবর্ত্তী, জলি তালুকদার, ডা. মনোষ দাস, এস এ রশীদ, হামিদা খাতুন, ফররুখ হাসান জুয়েল, বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, নিখিল চন্দ্র দাস, জনারধন দত্ত নান্টু, প্রকৌশলী শম্পা বসু প্রমুখ।

শওকত আলী বাবু/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।