ঢাকায় ইন্দিরা গান্ধী-বাজপেয়ীর নামে সড়ক চায় নির্মূল কমিটি
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও অটল বিহারি বাজপেয়ীর নামে ঢাকায় দুটি সড়কের নামকরণের প্রস্তাব করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এই দুইজনের অসামান্য অবদানের জন্য তারা এক চিঠিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের কাছে এই প্রস্তাব দেন।
শনিবার (৭ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ভারতের কলকাতা ও দিল্লিতে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নামে সড়ক রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও অটল বিহারি বাজপেয়ীর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের নামে ঢাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নামকরণের দাবি জানাই। এর মাধ্যমে ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে বাংলাদেশের সম্মান বহুগুণে বেড়ে যাবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে, আমাদের এ প্রস্তাব ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের কাছে দেয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকে ‘দেশবিরোধী চক্রান্ত’ বলে অ্যাখ্যা দেন। তাদের মতে, এই কুচক্রি মহলটি মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীকে তারা অস্বীকার করতে চাচ্ছে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, আগামী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ পালন করবে বাংলাদেশ। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য আসবেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু রাষ্ট্র, ১৯৭১ সালে যাদের অসামান্য অবদানের কথা ভুলবার নয়। সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফর এই অনুষ্ঠানকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করবে।
তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক কোনো বিষয় কাজ করে না। এই সফর বন্ধুত্বের, জাতির পিতাকে সম্মান জানানোর।
ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনাকে নিয়ে যারা নরেন্দ্র মোদির সফর বন্ধ করতে আন্দোলন করছেন, তারা দেশের ভালো চান না বলেও মন্তব্য করেন শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ ও ভারতের মৈত্রীকে অসম্মান করতে চান, মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান।
সংগঠনটির সহ-সভাপতি মুনতাসীর মামুন বলেন, মুজিববর্ষ নিয়ে অনেকেই বাড়াবাড়ি করছেন। দেশের প্রতিটি জেলাতে আজ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। এসবের চেয়ে যদি একটি করে ডিজিটাল স্কুল তৈরি করা যেত তাহলে অনেকেই উপকৃত হতেন।
তিনি বলেন, মুজিব শতবর্ষ পালন কবে অথচ তার জীবনী নিয়ে ১০০ পৃষ্ঠার কোনো লেখা পাই না। বিশ্বে আজ সাম্প্রদায়িক, অশান্তি শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের প্রতি এক কোটি টাকার মুজিব শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করার আহ্বান জানাই।
সাবেক বিচারপ্রতি এএইচ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ভারতে যেটা ঘটছে এটা আদালতের রায়ে করা হচ্ছে। এছাড়া ভারতের কাছে আর কোনো উপায় নেই। সেখানে অনেক প্রদেশের মানুষ এটার বিরোধিতা করছেন। এসব বিষয় ভারতের, তাদের নিজস্ব ব্যাপার। এর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিলের দাবিতে আন্দোলন মানে দেশের সঙ্গে চক্রান্ত করা। যারা এসব আন্দোলন করছেন তারা না জেনে, না বুঝে কথা বলছেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা আমজাত হোসেন, শ্যামলী চৌধুরী নাসরিন প্রমুখ।
এআর/এসআর/এমএস