ইভিএম কেজি দরে বিক্রির পরামর্শ খসরুর
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আগেই বলেছিলাম ইভিএম বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে। এখন সেটা বলছি না। সাগরে ফেললে পরিবেশ দূষণ হতে পারে। এই ইভিএম মণ-কেজি দরে স্টিল মিলে বিক্রি করতে। তাতে অন্তত অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।
‘সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বনাম ভোটের অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি। নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৩য় তলায় মাওলানা মুহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
খসরু বলেন, দেশ থেকে ভোট চুরির আরেকটি অস্ত্র ইভিএমের বিলুপ্তি ঘটাতে চাই। কারণ ইভিএম সম্পর্কে আর দেখার-বোঝার বাকি নেই। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আর কোনো প্রয়োজন নেই। যে পদ্ধতিতে ভোট হচ্ছে তাতে তো এটা স্পষ্ট- ইসি নয় নির্বাচন করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ভোট করছে সরকারি কর্মচারীরা, ভোট করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ। তাহলে শুধু শুধু ইসির কী দরকার?
খসরু দাবি করে বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে বিএনপি শতভাগ নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলেছে। কোনো আইন ভঙ্গ করে নির্বাচন করেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ শতভাগ নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করেছে। আমরা এসব বার বার নির্বাচন কমিশনে বলেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
আমীর খসরু বলেন, যে দেশে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে পাশে নিয়ে ভোট চান এর থেকে নির্বাচনী বিধিমালা লঙ্ঘনের আর কী উদাহরণ হতে পারে। যখন সরকার প্রধান সরাসরিভাবে ভোটের দিন সকালে প্রার্থীকে পাশে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন এরপর আর ভোট বলতে কিছু থাকে না।
খসরু বলেন, নির্বাচনের সময় ইভিএম মেশিনে অনেকেরই আঙ্গুলের ছাপ মেলেনি। আসলে এটাই তো হবার কথা। কারণ আগুলের ছাপ মেলানোর জন্য তো তারা ইভিএম নিয়ে আসেনি। টিপলেই নৌকায় ভোট পাওয়া যায়, তাহলে কষ্ট করে আর আগের রাতে নির্বাচন করার কী দরকার? ব্যালট পেপার ছিনতাই করে বাক্সে ভরে পাহারা দিয়ে আবার হিসাব মেলে না। কোনো কোনো জায়গায় এক শতাংশের বেশি ভোট হয়ে যায়। তাহলে এতসব ঝামেলার দরকার কী? ইভিএম টিপবেন আর নৌকায় ভোট পাবেন, যত টিপবেন তত ভোট পাবেন। ৫/৬ শতাংশের উপরে ভোট পড়েনি অথচ শেষে তারা ২৪ শতাংশ ভোট দেখিয়ে দিয়েছে।
খালেদা জিয়ার জেলে যাওয়ার দুই বছর শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। যতদিন খালেদা জিয়া জেলে থাকবেন ততদিন ভোটের অধিকার পাবেন না। আগামীকালের জনসভায় খালেদা জিয়ার মুক্তির রুপরেখা তৈরি ও নির্দেশনা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিছ ইসলাম, ঢাকা মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাড. নাসির হায়দার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম।
জেইউ/এএইচ/এমএস