নির্বাচনের সময় আমরা অভিনয় করি : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা রাজনীকিতরা নির্বাচনের সময় মানুষকে কাছে টানি। প্রতিশ্রুতির রঙিন ফানুস ওড়াই। আমরা জনদরদির অভিনয় করি, নির্বাচনের পর সত্যিকারের বিষয়টা মানুষ বুঝতে পারে। নির্বাচন চলে গেলে আমরা অবলিলায় সবকিছু ভুলে যাই। প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যাই।’
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন (বীর বিক্রম) স্মরণে আয়োজিত নাগরিক শোকসভায় প্রধান অথিতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশে অনেক জনপ্রতিনিধি আছে। জনগনের সাথে যাদের যে সম্পর্ক, তা যখন ভাবি, মনে হয় আমাদের সব জনপ্রতিনিধি জনগণকে ভালোবাসে না। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ দরকার। সেই সোনার মানুষের বড় অভাব রাজতৈক অঙ্গনে। জয়নাল আবেদীন সৈনিক হয়েও তিনি ছিলেন আলাদা একজন মানুষ। একজন জনপ্রতিনিধির চাইতেও জনগণের সাথে তার সম্পর্ক ছিল আরও গভীর এবং নিবিড়।’
তিনি বলেন, 'এই গ্রামে এলে বোঝা যায়, একজন মানুষ শেকড়ের টানে, তার জন্মভূমির জন্য কী দিতে পারেন। এ অন্ধকার গ্রাম, এ গ্রামকে আলোকিত করেছেন জেনারেল আবেদীন। এ অন্ধকার গ্রামে বিদ্যুতের আলো, শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন জেনারেল আবেদীন। আমি কাছ থেকে দেখেছিলাম, তার যে জীবন, তার যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, তার যে প্রজ্ঞা, তার যে কমিটমেন্ট।’
‘জাতীয় নির্বাচনের আগে, জেনারেল আবেদীনের আহ্বানে এই চুনতি গ্রামে আমি এসেছিলাম। এই যে রাস্তা, জেনারেল আবেদীনের উদ্যোগে হয়েছিল। তার শুভ উদ্বোধন আমি করেছিলাম। রাস্তা ছিল না, রাস্তা তিনি করেছেন। বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মরে যে সাধারণ মানুষ, তাদের জন্য তিনি হাসপাতালের ব্যবস্থা করেছে ’,- বলেন ওবায়দুল কাদের।
জেনারেল জয়নুল আবেদীন প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতীক ছিলেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তাকে আমি দেখেছি নেত্রীর আশপাশে সব সংকটে। ক্রাইসিসে আবেদীন ছুটে আসতেন। নেত্রীর একটা কথা মনে পরে, ‘আমাকে যদি কখনও না পাও। টেলিফোনেও যদি না পাও। আবেদীনের কাছে মেসেজ রেখে যেও। সময়মতো আমাকে জানাবে।’ কোনো খবর নেত্রীকে দিতে হলে, নেত্রীকে না পেলে আবেদীনের কাছে যেতাম। সেই আবেদীন আজ আর নেই।”
জেনারেল আবেদীন গণভবনের সঙ্গে জনগণের সেতুবন্ধন রচনা করেছিলেন উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে, জনগণের সঙ্গে গণভবনের সেতুবন্ধন রচনা করেছিলেন জেনারেল আবেদীন। অহংকার কখনও দেখিনি। তিনি সৈনিক হয়েও, তিনি তার গণ্ডি পেড়িয়ে জনগণের সাথে অবাধে মিশে যেতে পারতেন।’
প্রয়াত সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের বড় ভাই ইসমাইল মানিকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের নবনির্বাচিত এমপি মোসলেম উদ্দিন আহমদ, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল প্রমুখ।
জেডএ/এমএস