‘কখনও ভাবি নাই আ.লীগের মতো দলের দায়িত্ব নিতে হবে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার অবর্তমানে ৮১ সালের একটি কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। রাজনীতি আমার জন্য নতুন কিছু ছিল না। স্কুল জীবন থেকে আমি মিছিলে অংশগ্রহণ করতাম। স্কুলের দেয়াল টপকে আন্দোলনে যোগ দিতাম। কলেজ জীবন থেকে সরাসরি রাজনীতি শুরু করি। কলেজে যখন পড়ি তখন কলেজ ইউনিটে সহ-সভাপতি ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়ি তখনও ছাত্রলীগ করেছি। বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে গিয়েছি। সমাবেশে যোগ দিয়েছি। কিন্তু আমি কখনও ভাবি নাই আওয়ামী লীগের মতো এত বড় একটা দলের দায়িত্ব আমাকে নিতে হবে।

শুক্রবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ গ্রাম-গঞ্জের মানুষ নিয়ে গঠন করা দল। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, মানুষকে কিছু দিয়েছে। অসহায় মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বঙ্গবন্ধু কাজ করে গেছেন।

দলীয় নেতা-কর্মীদের রাজনীতির মাহাত্ম্য তুলে ধরতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন- ‘নীতিবিহীন নেতা নিয়ে অগ্রসর হলে সাময়িকভাবে কিছু ফল পাওয়া যায়। কিন্তু সংগ্রামের সময় তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় বাস্তবতা। যে কোনো রাজনৈতিক নেতার জীবনে নীতি-আদর্শ সব থেকে বড়। আর সেই আদর্শের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকার কথা। যিনি প্রস্তুত থাকতে পারেন, ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তিনি সফল হতে পারেন। দেশকে কিছু দিতে পারেন। জাতিকে কিছু দিতে পারেন।

আওয়ামী লীগ সভাপিত বলেন, আমরা বাঙালি জাতিকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা আমাদের রাজনীতি করে যাচ্ছি। তাই আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে আমি এই অনুরোধ করবো, আপনাদেরও সেই চিন্তা-চেতনা নিয়ে কাজ করতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়। স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমতায় আনা হয়। আমার বাবা, মা, ভাই, বোনদের যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচারের পথ বন্ধ করে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। দল করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করা হয়েছে। তারপরও আঘাত এসেছে। দলের মধ্যে ভাঙন হয়েছে। একবার, দুবার। সেই ভাঙন থেকে আবার আমি নতুনভাবে গড়ে তুলেছি। সারা বাংলাদেশে ঘুরেছি। এই সংগঠনকে ধীরে ধীরে গড়ে তুলে আজকে আওয়ামী লীগ এই বাংলাদেশে সব থেকে বড় সংগঠন এবং সব থেকে শক্তিশালী সংগঠন।

বিএনপির শাসনামল পেরিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর দেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। সরকারের সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দলকে তৃণমূল থেকে আরও শক্তিশালী করার উপর জোর দেন তিনি।

সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট পেশ করেন ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপ-কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম। মূল অনুষ্ঠানের শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। বাংলাদেশ সৃষ্টির আন্দোলন থেকে শুরু করে সর্বশেষ শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৩টা ৫মিনিটে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। গাড়ি থেকে নেমেই তিনি পতাকা মঞ্চের দিকে হেঁটে যান। সেখানে দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি তুলে ধরে প্রায় ২৫ মিনিট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

এফএইচএস/জেডএ/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।