দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই হার্ডলাইনে যাচ্ছে বিএনপি!


প্রকাশিত: ০৫:২৫ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

কেন্দ্রের নির্দেশ না মানায় এবার নিজ দলের নেতকর্মীদের বিরুদ্ধেই হার্ডলাইনে যাচ্ছে বিএনপি। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে দেশে ফিরলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দল পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গত ৯ আগস্ট সারা দেশের ৭৫টি ইউনিটে কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠায় বিএনপি। চিঠিতে আজ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইউনিটগুলোকে কমিটি গঠন করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়।

তবে হাতে গোনা কয়েকটি ইউনিট ছাড়া বেশিরভাগ ইউনিটই কেন্দ্রের এই নির্দেশ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। তাই যারা কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, যথাসময়ে কমিটি গঠন না করে কেউ কেউ দলের কাছে আরো সময় চেয়েছেন। আবার কেউ পাল্টা অভিযোগ করে কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছেন।

বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জাগো নিউজকে জানান, বেশ কয়েকটি জেলা কমিটি গঠন করতে আরো তিন মাস সময় চেয়ে লিখিত ও মৌখিত আবেদন করা হয়েছে। আবার কয়েকটি ইউনিট ছয় মাস সময় চাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুনর্গঠনের প্রধান সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা দলটির যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান বলেন, কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেয়ার পরও যারা এখনো কাজ শুরু করেননি। তাদের বিরুদ্ধে দেশে ফিরেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, পুনর্গঠনের চিঠি দেওয়ার পর প্রায় সব জেলা কাজ শুরু করেছে। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সময়মতো কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে যারা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন, তাদের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, দল পুনর্গঠন করতে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক কোনো জেলাই কমিটি গঠন করতে পারেনি। আজ ৩০ সেপ্টেম্বর, জেলা কমিটি পুনর্গঠনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে কিছু জেলা তাদের অধীন থানা/উপজেলা/পৌর/ইউনিয়ন কমিটি গঠন শেষ করেছে। তবে অন্য জেলা কমিটিগুলোর তেমন অগ্রগতি নেই।

এছাড়া ১৫ থেকে ২০টি জেলা কাজ শুরু করতে ব্যর্থ হওয়ায় ওই কমিটিগুলো ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে।

তবে বিএনপির এক নেতা জানান, যেসব জেলা কমিটি গঠনে ব্যর্থ হবে, ওইসব জেলা কমিটি কেন্দ্র থেকে গঠন করে দেওয়া হবে।

গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে চোখের অপারেশন শেষে আগামী ৭ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। দলীয় প্রধান দেশে ফিরলে দল পুনর্গঠনের একটি প্রতিবেদন তুলে ধরবেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান। তারপরই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া কিভাবে এগোবে দল সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষ নেতার দাবি সারাদেশে নীরবে কমিটি গঠন চলছে। প্রচারণা থাকলে সরকারের নজরদারি থাকত। কারণ সরকার চায় না বিএনপি সংগঠিত হোক। সে কারণে বিভিন্ন জেলায় নানা প্রতিকূলতার মধ্যে নেতাকর্মীরা আলোচনা করে কমিটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করছেন।

সারাদেশে বিএনপির ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ঢাকা মহানগর বাদে ৭৪টি জেলা কমিটি গঠনের কাজ চলছে। এসব জেলার অধীনে সাড়ে সাত শতাধিক ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা ও পৌর কমিটি রয়েছে।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন শেষ করতে না পারার কারণ হিসেবে তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করে বলছেন, বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে অনেক নেতা এখনো কারাগারে। এছাড়া আগাম জামিন না পাওয়ায় অনেক নেতা এলাকায় যেতে পারছেন না।

পাশাপাশি পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে কোনো প্রস্তুতি সভা করলেও তাতে পুলিশ বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল হয়। এরপর আর কেন্দ্রীয় কমিটি হয়নি। সব জেলা কমিটি গঠনের পর বিএনপি জাতীয় কাউন্সিল করবে বলে জানা গেছে।

এমএম/একে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।