আবরারের রক্তে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বীজ বপিত হয়েছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৭ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৯

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারের রক্তে আধিপত্যবাদ-সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে বীজ বপিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা, ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তির প্রতিবাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মোশাররফ বলেন, দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আবরার স্ট্যাটাস দিয়েছিল। এটা দেশের মানুষের প্রতিবাদ। মেধাবী ছাত্র বলেই সেটা করেছে। তার জন্য তাকে প্রাণ দিতে হলো। আবরারের কথা এ দেশের মানুষের কথা। আবরারকে হত্যা করে দেশের জনগণের কণ্ঠকে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্র সমাজ এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তার রক্ত জনগণ বৃথা যেতে দেবে না।

তিনি বলেন, শহীদ জেহাদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার পতনের বীজ বপিত হয়েছিল। তেমনি আবরারের রক্তের বিনিময়ে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বীজ বপিত হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না- উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মাধ্যমে, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে, গণতন্ত্র মুক্ত হবে।

ভারতের সাথে চুক্তির সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ফেনী নদীর পানি উত্তোলনে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন, সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে সম্মতি দিয়েছেন, উপকূলে যৌথ নজরদারির নামে ভারতকে ২০টি রাডার প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দিয়েছেন। আমরা যে এলপিজি আমদানি করি তা ভারতে রফতানি করার অনুমতি দিয়েছেন। এসব চুক্তির প্রতিটি বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে মোশাররফ বলেন, ফেনী নদীর পানি উত্তোলনের অনুমতি দিলেন কিন্তু তা কতখানি তারা উত্তোলন করবে তা পরিমাপ করার বিষয়ে এ চুক্তিতে কিছু নেই। এছাড়া ৩৬টি নদীর পানি ভারত জোর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

মোশাররফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সামান্য পানি কিন্তু এর ফলে ফেনী নদীর পাশের লোকজনের কৃষিকাজ ব্যাহত হবে। মুহুরী প্রজেক্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আপনি বলছেন, জাতীয় স্বার্থ ব্যাহত করেননি। সাবরুম শহরে তাহলে এতদিন তারা পানি পান করেছিল না? এটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে প্রতারণা করে ভারতকে সুবিধা দেয়ার জন্যই করেছেন।

মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সমুদ্র বন্দরে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ভারতের পণ্য বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরে খালাস হলে আমাদের ব্যবসায়ীরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যৌথ পর্যবেক্ষণের নামে বিদেশি রাডার স্থাপন হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হবে, হুমকির মুখে পড়বে। আর এলপিজি আমদানি করে করে তা রফতানি করবেন। চারটি চুক্তি ভারতের স্বার্থে করা হয়েছে। এটা দেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করেছিলেন, গ্যাস না দেয়ার জন্য ২০০১ সালে তিনি ক্ষমতায় আসতে পারেননি। তাহলে এবার কি তার খেসারত দিলেন? আসলে শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে তিনি চুক্তি করে এসেছেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

কেএইচ/এমএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।