ক্যাসিনো নিয়ে মুখ খুললো জামায়াত
ক্যাসিনো নিয়ে বিএনপির পর মুখ খুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির দাবি, সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় বহু আগেই গড়ে ওঠে এ ধরনের অবৈধ ক্যাসিনো।
ক্যাসিনোতে জুয়ার আড্ডা, ঘুষ, দুর্নীতিসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশবাসী মনে করে সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় বহু আগেই গড়ে ওঠে এ ধরনের অবৈধ ক্যাসিনো। একটি জাতীয় দৈনিকে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টনক নড়েছে এবং তারা অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু দেশবাসীর প্রশ্ন এর আগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দুর্নীতি দমন কমিশন কী করেছে? তারা কী ঘুমিয়ে ছিল? তারা আগে থেকে কেন এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেনি? দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ কী? ’
‘ছাত্রলীগের পর যুবলীগকে ধরেছি, অন্যদেরও ধরব।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই মন্তব্য উল্লেখ করে জামায়াত মুখপাত্র তার বিবৃতিতে বলেন, ‘দেশবাসীর প্রশ্ন তিনি এতদিন কেন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী-দুর্নীতিবাজদের ধরেননি? অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার নিজেই যেখানে রাতের আধারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে ব্যালট ডাকাতি করে নির্বাচনের প্রহসন করে, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয় এবং ভুরিভোজ খাওয়ায়ে অন্যায়ভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর মুখে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা কী মানায়?’
শফিকুর বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রহসন মঞ্চস্থ করার আগে প্রধানমন্ত্রী জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের। কিন্তু তিনি তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। সেজন্য দেশের জনগণ তার কথা আর বিশ্বাস করে না। দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে ‘সারা গায়ে ব্যথা, ওষুধ দিব কোথা’ এ প্রবাদ বাক্যটি মনে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার কোনো পরিবেশ নেই। ঘুষ-দুর্নীতির কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটে পরীক্ষা ছাড়া ছাত্রলীগের নেতাদের ভর্তি করার বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা যায় যে, বিশ্বের ১৩ শত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান এক হাজারেরও নিচে। বিবিসির জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ৬৫% ভাগই বাংলা পড়তে পারে না। এ থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে, শিক্ষাঙ্গণে কী সাংঘাতিক অবস্থা বিরাজ করছে? তাই দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের নানা কেলেংকারি ও ব্যর্থতার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
কেএইচ/জেডএ/এমএস