মহাসড়কে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত গণবিরোধী : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১০ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, দুই দিন আগে একনেকের সভায় দেশের মহাসড়ক থেকে টোল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ গণবিরোধী।

তিনি বলেন, জনগণের পকেট কাটতেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা হলে তা যাত্রীদের পকেট থেকেই দিতে হবে, যানজটের তীব্রতা বাড়বে, নষ্ট হবে সময়।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশের মহাসড়কগুলো তো টোল আদায়ের জন্য উপযুক্তই না। সারা দেশের অধিকাংশ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। মহাসড়কগুলোর বেহাল অবস্থা। এসব কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। এছাড়া নানা কারণে সব সড়কে যানজট লেগেই আছে। যানজটের কারণে ঠিকমত গাড়ি চলতে পারে না। এর মধ্যে টোলঘর বসালে প্রতিবন্ধকতা আরও বাড়বে। যানজটের পরিমাণও বেড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, এমনিতে বাস ভাড়া অনেক বেশি। সড়কে টোল আদায় করলে ভাড়া আরও বাড়বে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া পরিবহন মালিকরা নেন না। তারা অনেক বেশি টাকা নেন। এখন টোলের টাকাও যাত্রীদের কাছ থেকে উঠানো হবে। এই টোলের ফলে যাত্রীদের অর্থ অপচয় হবে, সময় অপচয় হবে। ফলে যাত্রীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বেশি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, টোল থেকে আদায় হওয়া টাকার কতো অংশ সরকারি কোষাগারে জমা পড়বে, সেই প্রশ্নও রয়েছে। সরকার নিজেরা টাকা উঠালে সেখানে দুর্নীতির কারণে নয়-ছয় হয়। আবার ইজারা দিলে খাতিরের লোকজনকে নামমাত্র মূল্যে দেয়া হয়। ফলে সরকারি কোষাগারে খুব বেশি টাকা জমা পড়ে না। অন্যদিকে টোল প্লাজা পার হতে যদি প্রতিটি গাড়ির পাঁচ মিনিট করেও সময় লাগে, তাহলে শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পাঁচ লাখ মিনিট সময় মানুষের জীবন থেকে চলে যাবে। এই এক লাখ গাড়িতে তো অনেক মানুষ চড়বেন। এর পাশাপাশি টোল আদায়ের সময় গাড়ির অতিরিক্ত তেল পুড়লে তার টাকাও আদায় হবে জনগণের কাছ থেকেই। সুতরাং টোলের খড়গ নেমে আসবে জনগণের কাঁধেই। টোলসহ অতিরিক্ত সব খরচের মাশুল দিতে হবে জনগনকেই।

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা ও নির্যাতন আরও বেড়ে গেছে । বেড়েছে বিএসএফের নৃশংসতার ধরনও। বিশেষ করে দেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় আটক বাংলাদেশিদের প্রতি ভয়ংকর নৃশংস আচরণ করেছে বিএসএফ। বিএসএফ বাংলাদেশিদের ওপর যে নিষ্ঠুর আচরণ করছে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। আটক বাংলাদেশিদের বিষয়ে আইন প্রয়োগের সুযোগ থাকলেও তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। সুযোগ পেলেই এ দেশের নিরীহ লোকদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হচ্ছে। দিন দিন বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যার সংখ্যা বাড়লেও নীরবতা পালন করে আসছে বর্তমান সরকার।

তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যা নিয়ে রাষ্ট্র একবারে চুপ করে বসে আছে কিংবা কোনো কোনো সময় প্রতিবাদের পরিবর্তে বিএসএফের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। দুনিয়ার কোনো দেশের সীমান্তে এত হত্যা ও রক্তপাতের ঘটনা ঘটে না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিবাদ হলে এসব ঘটনা কমতে পারতো। কিন্তু সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত নিরাপদ হচ্ছে না। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। আমি সরকারের এ ধরনের ঘৃণ্যনীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ সময় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেন রিজভী।

কেএইচ/এমএসএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।