বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করতে পারলে বিজয় আসবে : ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৮ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০১৯
ফাইল ছবি

সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করতে পারলে বিজয় আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় পার্টির নেতা কাজী জাফর আহমদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তার প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান যে রাজনীতি এখানে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের যে রাজনীতি, মানুষের যে রাজনীতি, গণমানুষের যে রাজনীতি এবং যে রাজনীতির পতাকা বেগম খালেদা জিয়া তুলে নিয়ে বেড়িয়েছেন দীর্ঘকাল এবং কারাগারে রয়েছেন ওই রাজনীতি জন্যে। সেই রাজনীতি হচ্ছে আমাদের রাজনীতি।’

তিনি বলেন, আমরা আমাদের এ রাজনীতিকে যদি সঠিক পথে নিতে পারি, যদি নিয়ে যেতে সক্ষম হই, আমরা যদি আরও বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করতে পারি, আজ শুধু জাতীয় পার্টি নয়, অন্যান্য সমস্ত দেশপ্রেমিক দলগুলোকে যদি এক করতে পারি তাহলে অবশ্যই বিজয় আমাদের আসবেই আসবে।

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, প্রশাসন একেবারে দলীয়করণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দলীয়করণ, বিচার ব্যবস্থাকে সরকার নিয়ন্ত্রণে নেয়ার প্রতি মুহূর্তে চেষ্টা চলছে। ফলে গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রটাই ভেঙ্গে পড়েছে। আমার মনে হয়, আমরা যখন অকার্যকর রাষ্ট্রের কথা বলি, আজ বাংলাদেশ অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে চলে গেছে। এটা ফেইল্ড স্টেট হয়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ অবস্থার মধ্যে যে কথাগুলো এখানে আপনারা বলেছেন, আমরা কী করব? আমরা মানুষের মাঝে আছি, আমরা মানুষের রাজনীতি করি, বাংলাদেশের জনগণের রাজনীতিই আমাদের রাজনীতি। আমরা কখনও পরাজিত হই নাই। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির রাজনীতিও কখনও পরাজিত হয়নি। খারাপ সময় এসেছে, আমরা নিচের দিকে গেছি, সংকট এসছে কিন্তু সেই সংকট থেকে আমরা ফিনিক্স পাখির মতোই জেগে উঠেছি। এটা বাস্তবতা, এটা আমি বাড়িয়ে বলছি না।

তিনি বলেন, চরম সংকটময় মুহূর্ত চলছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত সংকটময় মুহূর্ত কখনও এসেছিল বলে আমার কাছে মনে হয় না। আমাদের সমস্ত অর্জনগুলো যা আমরা রক্ত দিয়ে একাত্তর সালে যুদ্ধ করে, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে অর্জন করেছি, সমস্ত অর্জনগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এখন গণতন্ত্রের কথা যেটা বলেন ক্ষমতাসীনরা, একেবারেই মিথ্যা কথা বলেন। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কই নাই, বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখেন, বাজেট দেয়, সেই বাজেটে মানুষের পকেট খালি করে। এমনভাবে বাজেট দেয় যে, এমনভাবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করে, চোরে আরও বড় চোর হয়, লুটেরা আরও বড় লুটেরা হয়। ব্যাংকগুলো ফোকলা করে দিয়েছে,শেয়ার মার্কেটে কিচ্ছু নেই, ধ্বংস করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি জানেনই না ডেঙ্গুতে কতজন মারা গেছে! আপনি যদি মফস্বল, থানা কমপ্লেক্সে যান, আপনার মনে হবে না এ দেশে কোনো সরকার আছে। হাসপাতালগুলো নোঙরা, ভেঙে পড়ছে, খসে পড়ছে, সেই জায়গায় কোনো মতে রোগীরা বিছানা নিয়ে আছে।

শিক্ষার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আজ ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাঙের ছাতার মতো মেডিকেল কলেজ, কোথায় কী হচ্ছে, কার পলিসি জানি না আমরা।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর আছেন, তার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড কী- আমরা সবাই দেখি। এটা আমরা চিন্তাও করতে পারি না। এসব লোকেরা আমাদের শিক্ষার গুরু হয়েছেন। কথা শুনলে মনে হয় না কোনো কোনো রকমের শিক্ষা-সংস্কৃতি তাদের মধ্যে রয়েছে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক কাজী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নঈম জাহাঙ্গীর, বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, জহির উদ্দিন স্বপন, পিপলস পার্টির রিটা রহমান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সুলতান আলম মল্লিক, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, শেখ মুজিবুর রহমান, ন্যাপ ভাসানীর মোস্তফা আখন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কেএইচ/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।