রাজনৈতিক শূন্যতা ও প্রতিহিংসা থেকে গুমের উৎপত্তি : ন্যাপ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২১ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০১৯

দেশের গুম পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।

নিখোঁজ হওয়া মানুষের স্মরণে জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃদ্বয় বলেন, গুমসহ ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায়-অবিচার প্রতিরোধ করতে মানবাধিকারকর্মীসহ প্রত্যেক নাগরিককে সোচ্চার হতে হবে।

গুম হয়ে যাওয়া ও হারিয়ে যাওয়া মানুষদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করে নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে গুমের আতঙ্ক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। রাজনৈতিক শূন্যতা, প্রতিহিংসা ও অপশাসন থেকে উৎপত্তি হয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গণমাধ্যমে চোখ বুলালে আর খবরের কাগজ খুললেই খুন, গুম, নারী নির্যাতন। এর সঙ্গে সরকারি দলের সহযোগী ও সমর্থিত সংগঠনের নেতাকর্মীরাই জড়িত। কোনো কোনো গুমের জন্য দেশের আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর দিকেও সন্দেহের আঙুল উঠেছে।’

দেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের জরুরি ভিত্তিতে খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, দেশে এখন মানুষ চরম আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রতিনিয়ত বিরোধী দল দমনে ব্যস্ত রাখায় সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, গুম-অপহরণ জঙ্গিবাদের মতোই একটি ভয়াবহ অপরাধ। সুতরাং যদি জঙ্গিবাদ দমন করতে চাই, তাহলে এ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধকেও আগে দমন করতে হবে। গুমকে আমরা সহ্য করব, কিন্তু জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বলব, এতে কোনো লাভ হবে না। সুতরাং বাংলাদেশে যদি আমরা আইনের শাসন, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকার রক্ষা করতে চাই, তাহলে এর বিরুদ্ধেও সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আমরা জঙ্গিবাদকেও দমন করব, গুম-খুন অপহরণ এ জিনিসগুলো সম্পর্কেও আমাদের অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।

ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, গুমের জন্য বিশেষ আইন তৈরি করতে হবে। সরকারকে এবং রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা বেআইনি কাজ করছে, তার প্রতিরোধ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন বেআইনিভাবে অপরাধীদের মতোই অপরাধ করে অপরাধ দমনের চেষ্টা করে, সে সমাজে কিন্তু অপরাধ বাড়ে, সে সমাজে অপরাধ কমে না।

তারা বলেন, সরকারকে মনে রাখতে হবে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের চেষ্টা কখনও সফল হয় না। শক্তি প্রযোগ করতে গেলে গুম-খুন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সমাজে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। সরকারের উচিত গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজনীতির সব দরজা উম্মুক্ত করে দেয়া। সরকারকে মনে রাখতে হবে বহুদলীয় রাজনীতি যদি না থাকে সমাজ ও রাষ্ট্রে অশুভ ও অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান ঘটতে বাধ্য। গুমের মতো সমাজবিরোধী, মানবতাবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী এই অমানবিক দুষ্কর্মের অবসান ঘটানো সম্ভব কেবল জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে।

কেএইচ/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন