সরকার ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করছে : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৭ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৯
ফাইল ছবি

সরকার ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আর বাড়বে না। কিন্তু পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোগীর সংখ্যা ও লাশের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এখন ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির যে সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে সেটি প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল এবং হাসপাতালে ভর্তি না হতে পেরে যারা বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয় না। বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, সরকার ডেঙ্গু মহামারিতে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে বা হাসপাতালে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে মানুষ। রোগীতে ঠাসা দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো। এমনকি সরকারি হাসপাতালগুলোর খালি স্থানে অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ঢল ঠেকানো যাচ্ছে না। ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়ালেও সরকার এ নিয়ে এখনও গুজব আবিষ্কারের মধ্যেই আছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বলেছেন, এডিস মশা মারার জন্য কার্যকর ঔষধ আনা হয়েছে। প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে এই ছিটানো ঔষধে এডিস মশা আরও উৎসাহিত হয়ে সন্তান-সন্ততি ব্যাপকভাবে উৎপাদন করে যাচ্ছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের মধ্যে মরণের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গু আক্রমণের আগেই প্রস্তুতির অভাব এবং ডেঙ্গু মহামারিতে সারাদেশ আক্রান্ত হওয়ার পরও সরকারের উচ্ছাস ও তামাশারও কোনো কমতি নেই। তাই আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের ফটোসেশনে কাজ হবে না, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

তিনি বলেন, প্রতিদিনই শিশু, কিশোর, যুবক, ব্যবসায়ী, ছাত্র, মানবাধিকার কর্মী হয় গুম হচ্ছে, না হয় তাদের গলাকাটা লাশ পাওয়া যাচ্ছে। ফেনীতে নিখোঁজের ৭ দিন পর স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার, লক্ষ্মীপুরে আলমগীর হোসেন নামে ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যা, হবিগঞ্জে কিশোর সুমন মিয়ার এক মাস দশদিন পার হয়ে গেলেও কোনো সন্ধান মেলেনি। এগুলোই এখন সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম। খুন, ধর্ষণ, পিটিয়ে হত্যা, সারাদেশে ডেঙ্গুর মতোই ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলেধরা সন্দেহে দেশে বেধড়ক গণপিটুনি চলছে। ছেলেধরা গুজব, হত্যার ঘটনা পরিস্থিতি এমনই ঘোলাটে করে তুলেছে যে, অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে।

রিজভী বলেন, ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার কারণে শিশু হত্যার ঘটনা যেন প্রতিদিনের ভয়াবহ সংবাদ পড়তে হচ্ছে মানুষকে। একেই বলে নৈরাজ্য। বর্তমানে আমরা অরাজকতার চরম লগ্নে এসে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশে এখন ঘাতক ও মৃত্যুরই সহাবস্থান। ঊর্ধ্বতন আদালতও বলেছেন বিচার না হওয়ার কারণে অধরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ন্যায় বিচারও এদেশ থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে।

এ সময় দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন, নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।