চামড়া শিল্পের ‘হারিকেন’নিভু নিভু প্রায় : ন্যাপ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫৩ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০১৯

এক দশকে চামড়া শিল্পের ‘হাতে হারিকেন’উঠেছে এবং এবার সেই ‘হারিকেন’টাও নিভু নিভু প্রায় উল্লেখ করে এ শিল্প ধ্বংসে দায়ী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, বলা হচ্ছে সারাবিশ্বে চামড়ার দাম কমছে। আবার বলছে চামড়া যেন ভারতে পাচার না হয় সেজন্য বিজিবি সতর্ক আছে? একই সঙ্গে ঘোষণা দিল সরকার যে কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু চামড়া রফতানি করা যাবে। এতে করে চামড়া ভারতে পাচার হবে।

তারা বলেন, ভারতের চামড়া শিল্পের বাজার বহুলাংশে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চামড়ার ওপর নির্ভরশীল। পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ায়, এ বছর ভারতকে বাংলাদেশের চামড়ার ওপর অধিক নির্ভরশীল হতে হবে। ফলে বাজার চাহিদানুযায়ী চামড়ার দাম ভালো পাওয়ার কথা। কিন্তু এ বছর ঘটেছে সম্পূর্ণ উল্টো। এক সময় ৫০০ টাকায় একটি ভালোমানের দেশি চামড়ার জুতা পাওয়া যেত, তখন কোরবানির গরুর চামড়া ১ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এখন ভালো মানের চামড়ার দেশি জুতা ৭-৮ হাজার টাকার নিচে পাওয়া যায় না। কিন্তু এখন গরুর চামড়া ২০-২০০ টাকায় নেমে এসেছে। এতে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে চামড়া পুঁতে, পুড়িয়ে বা নদীতে ফেলে দিয়েছেন। এ প্রবণতা জনপ্রিয় হলে কার কী হবে জানি না, তবে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প ধ্বংস হবে এবং বিদেশি কোম্পানির পোয়াবারো হবে।

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, চামড়া শিল্প দেশের অর্থনীতির সাফল্য গাঁথায় স্বীকৃত হতো একসময়। সেই স্বীকৃতির বড় কারণ ছিল কোরবানির পশু থেকে প্রাপ্ত চামড়া। মূলত পাট এবং চামড়া শিল্পের ওপর ভিত্তি করেই আমাদের শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির গোড়াপত্তন। পাটের কথা আজ ইতিহাস। পাটকলগুলোর যন্ত্রপাতি যখন লুট হয়ে গেল, চালু করা গেল না বন্ধ পাটগুলো। উল্টো বন্ধ হতে লাগলো বাকিসব। তখন থেকেই পাটের মরণদশা শুরু। এখন তো পাট শিল্প সমাহিত। আদমজী নেই। যাও চামড়া শিল্পটা টিকে ছিল, এক দশকে সেটারও ‘হাতে হারিকেন’ উঠেছে। আর এবার, সেই ‘হারিকেন’টাও নিভু নিভু প্রায়। কোরবানির পশুর চামড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ মাদরাসায় দান করেন বা মাদরাসায় বেচে দেন। আর এই দান বা বেচে দেয়ার কারণ হলো মাদরাসাগুলোর এতিমখানা। যে এতিমদের দেখার কেউ নেই, মাদরাসার এতিমখানাই তাদের ভরসা। কিন্তু মাদরাসার এতিমগুলোর খেয়ে পরে বাঁচার অবলম্বনই অন্যের দান-ধ্যান, আর কোরবানির পশুর চামড়া।

ন্যাপ নেতৃদ্বয় আরও বলেন, এ রকম হরিলুট ব্যবস্থায় আমাদের রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে। এখানে সিন্ডিকেটের কারণে কৃষক ধানের ন্যায্য দাম পায় না, কোরবানির পশুর চামড়ার দাম জনগণ পায় না, সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ে। এমনকি ডেঙ্গু মশার ওষুধ ক্রয়ে দুই কোম্পানি সিন্ডিকেট করে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুট করছে। আর্থিক ও ব্যাংক খাতে সিন্ডিকেটের লুটপাট চলছে। আর এসব সিন্ডিকেটের পাহারাদার এবং আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে রাষ্ট্র ও সরকার।

তারা বলেন, কতভাবে ব্যবসায়ীরা সুবিধা পেতে পারে সরকার তার সব আয়োজন নিশ্চিত করে। ব্যবসায়ীদের খেলাপি ঋণের সুদ মওকুফ করা হচ্ছে, ১০ বছরের জন্য অবলোপন করা হয় ঋণ। অপরদিকে কৃষকের মাত্র ৫০০ কোটি টাকা কৃষি ঋণের কারণে তাদের নামে সার্টিফিকেট মামলা দিয়ে কোমরে দড়ি দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের কাজকারবার দেখে মনে হয়, জনগণের প্রতি সে কোনো দায় অনুভব করছে না।

কেএইচ/এনডিএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।