প্রধানমন্ত্রী সত্য কথা বলেননি : ফখরুল
পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন হচ্ছে না বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘এটা তো আমার কাছে পরিষ্কার যে, এখানে প্রধানমন্ত্রী সত্য কথা বলেননি। আমাদের পত্র-পত্রিকাগুলোতে মানবাধিকারের যে গ্রুপগুলো রয়েছে, তাদের যে রিপোর্ট আমরা পেয়েছি, এমনকি অ্যামনেস্টি ইন্টান্যাশনাল, হিউম্যান রাইট ওয়াচ এর রিপোর্টে আমরা দেখেছি, প্রতি বছর এখানে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে মৃত্যু হয়েছে চারশ থেকে সাতশ। গত বছর বিশেষ করে চারশ’র উপরে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে হত্যা হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘হেফাজতে যে টর্চার- এটা তো কমন ব্যাপার। পত্র-পত্রিকায় ছবিতে এসেছে, আপনি দেখেছেন এর আগেও ফ্যানের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝু্লিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আছেন, যাদের পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা হয়েছে। এটা ছবিতে চলে এসেছে। এগুলো তো আপনারা সবাই জানেন। পত্র-পত্রিকায় এসেছে। সুতরাং উনি (প্রধানমন্ত্রী) অবলীলায় অস্বীকার করলেন, এটা (হেফাজতে মৃত্যু) হয় না। আমার মনে হয়, এটা সঠিক নয় তো বটেই, এটা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই না।’
বাংলাদেশের প্রকৃত যে চিত্র, বাংলাদেশে নির্যাতন সরকারিভাবেই চলছে এবং সরকার বিরুদ্ধ মত ও যারা ভিন্নমত পোষণ করে তাদের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন আরও বেশি করে চালিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন যে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শিল্পী শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করে অত্যাচার করা হয়েছে এবং কাস্টডিতে নেয়ার পর অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার সঙ্গে নির্মম আচরণ করা হয়েছে।’
গতকাল (৬ আগস্ট) বিবিসি বাংলা বিভাগে একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি শ্রেণি হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের মধ্যে কিছু আছে যারা অসাংবিধানিক সরকার, জরুরি অবস্থা অথবা মার্শাল ল’ বা মিলিটারি রুলার এলে তাদের খুব দাম বাড়ে। কাজেই তারা সারাক্ষণ খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আমাদের পেছনে লেগে আছে ....আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখন ঠিক ওইভাবে হেফাজতে মৃত্যু হয় না। নির্যাতনও সেভাবে করা হয় না।’
সম্প্রতি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে আটক ব্যক্তিদের নির্যাতনসহ মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘের একটি কমিটির মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।
কেএইচ/এসআর/এমএস