ছেলেধরা গুজবের হোতা লন্ডনে বসে আছেন : তথ্যমন্ত্রী
ছেলেধরা গুজবের হোতা লন্ডনে বসে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় নূরজাহান ক্লাবের মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ছেলেধরা গুজবের হোতা লন্ডনে বসে আছেন। সেখান থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ছেলেধরা গুজব প্রথমে লন্ডন থেকে পোস্ট দেয়া হয়। আর সেটা এখানকার কিছু বিএনপি- জামায়াতের নেতাকর্মী মনিটরিং করে সারাদেশে ছড়িয়ে দেন। এভাবে ডাল-পালা গজিয়ে ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ছেলেধরা সন্দেহে অনেক নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। সরকার এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। হত্যা মামলার আসামি হিসেবে সবার বিচার হবে। শুধু মানুষ হত্যাকারীদের বিচার নয় গুজব যারা রটিয়েছে তারাও সমানভাবে দোষী। তাদের বিরুদ্ধেও সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এখন আবার গুজব ছড়ানো হচ্ছে বিদ্যুৎ না থাকলে ছেলেধরা আসবে। গুজব রটনাকারীদের প্রতিহত করতে হবে। কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। এই দলকে যে কেউ সমর্থন করতে পারে। কিন্তু নেতৃত্বের আসনে যে কাউকে আমরা বসাতে পারি না। নেতৃত্বের আসনে তাদেরই বসাতে হবে যারা দলের দুঃসময়ে বুকে পাথর বেঁধে আওয়ামী লীগ করেছে। এখন সবাই আওয়ামী লীগের নৌকায় উঠতে চায়। কিন্তু নৌকায় আমরা সবাইকে নেবো না। আমাদের নৌকা ইতোমধ্যে ভরে গেছে। যারা পিঠ বাঁচানোর জন্য নৌকায় উঠতে চান তাদের নেয়া যাবে না।
রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি উম্মাদের মতো আচরণ করছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন মশার কামড়ের জন্যও নাকি আওয়ামী লীগ দায়ী। এ রকম হাস্যকর বক্তব্যই প্রমাণ করে তারা যে রাজনৈতিক কতটা দেউলিয়া।
মাঠে না থাকলেও ঘাপটি মেরে থাকা বিএনপির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মোহাম্মদ সেলিম ও আকতার হোসেন খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মলনের প্রথম অধিবেশনে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, মিরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, রাঙ্গুনিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলী শাহ, রাউজানের উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার বাবুল, রাঙ্গুনিয়ার মেয়র মোহাম্মদ শাহজাহান সিকদার, জেলা পরিষদ সদস্য কামরুল ইসলাম চৌধুরী, জহির আহমদ চৌধুরী, আবুল কাশেম চিশতি, ইফতেখার হোসেন বাবুল, ইদ্রিস আজগর, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ছাদেকুন নুর সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, গিয়াস উদ্দিন খান প্রমুখ।
সম্মেলনে বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার। দলের প্রয়াত নেতাদের শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দপ্তর সম্পাদক আবু তাহের। এর আগে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অতিথিরা।
আবু আজাদ/জেএইচ/এমএস