৭১ আর ১৯ এর জামায়াত এক নয় : অলি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৫১ এএম, ২৮ জুন ২০১৯

জামায়াতে ইসলামী নিয়ে সাফাই গাইলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। ১৯৭১ সালের জামায়াত আর ২০১৯ সালের জামায়াত এক নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।

কর্নেল (অব.) অলি বলেছেন, আজকে যারা জামায়াত করে তারা বাংলাদেশের। তারা এই দেশকে ভালোবাসে। তাদের মধ্যে অনেক সংশোধন আসছে। তারা নিজেদের মধ্যে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা দেশপ্রেমিক শক্তি। কাজেই আমরা আশা করব, যারা দেশকে ভালোবাসে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চায়, দেশবাসীকে মুক্ত করতে চায়, যারাই আমাদের সাথে আসবে, সবাইকে আমরা সাথে রাখব। তবে দালালদের নয়।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে নিজের নতুন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ ঘোষণা দেয়ার পর প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধা এই রাজনীতিক যখন এ ঘোষণা ও প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন তখন তার পাশে বসা ছিলেন আরেক মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরবিক্রম, এলডিপির মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা রেদোয়ান আহমেদ। অনুষ্ঠানে কর্নেল অলির হাতে ফুল দিয়ে এলডিপিতে যোগ দেন আরেক মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল।

জাতীয় সংসদের পুনর্নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ গঠনের ঘোষণা দেন এলডিপির সভাপতি ও ২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল অলি আহমদ বলেন, এ ধরনের দাবি এর আগে কেউ দেয়নি। আমি যখন বললাম মধ্যবর্তী নির্বাচন চাই। তখন সবাই মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি জানাল। আসলে মধ্যবর্তী নির্বাচন সঠিক কথা নয়। ওটা আমি পরীক্ষা করার জন্য বলেছিলাম। আসল কথা হলো পুনর্নির্বাচন। মধ্যবর্তী নির্বাচন চাইলে তো আগের নির্বাচন মেনে নেয়া হয়।

আরেক প্রশ্নের জবাবে অলি বলেন, আমার ডানে-বামে মুক্তিযোদ্ধারা বসে আছেন। আমার সামনে যারা বসে আছেন তাদের অনেকে ইতোমধ্যে মতামত দিয়েছেন, অনেকে সময় নিয়েছেন। আমাদের সাথে কারা কারা আছেন যথাসময়ে তালিকা আপনাদের সামনে প্রকাশ করবো।

লিখিত বক্তব্যে কর্নেল অলি আহমদ ১৮টি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদের পুনর্নির্বাচন, অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা, জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিশন গঠন, দেশের শিক্ষিত যুবকদের নিয়োগে অগ্রাধিকার, গুম ও খুন বন্ধের পদক্ষেপ, ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, লিগ্যাল এইড কমিটি গঠনের ঘোষণা, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও হয়রানি বন্ধ, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন, ভেজাল ও নকল ওষুধ বন্ধ, খাদ্যে ভেজালকারীদের মৃত্যুদণ্ড, কৃষক যেন ন্যায্যমূল্য পায় তার ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক সমতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, জালভোট প্রদানকারী ও সাহায্যকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল, বন্ধ সব মিডিয়া খুলে দিতে হবে, দুর্নীতি দমন আইনের বৈষম্য দূরীকরণ করতে হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সংবিধান অনুযায়ী সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ নতুন নতুন কোনো জোট কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল অলি আহমদ বলেন, এটা জোট কেন হবে? আমরা ২০ দলীয় জোটে আছি, থাকব। ২০ দলীয় জোটের মূল দল বিএনপি ২০ দলীয় জোটে থেকেই কামাল হোসেনের সাথে কাজ করছেন।

বিএনপির কিছু নেতা সরকারের সঙ্গে আঁতাত করেছে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই বিএনপি নেতা বলেন, আমি বিএনপির কথা বলিনি। আমি বলেছি আমাদের অনেকে সরকারের সাথে দালালি করছে বলে আজকে জাতির এ অবস্থা।

এসব দালাল কারা জানতে চাইলে কর্নেল অলি বলেন, আপনারা সাংবাদিক। আমি আশা করব, আপনারা আমাদের সহায়তা করবেন। আপনারা যে দালালদের চেনেন না, এটা সত্য কথা না। আপনারা যদি বলেন, আপনারা চেনেন না, তাহলে আমি আপনাদের চিনিয়ে দেব। আপনারা সিনিয়র লোক, আপনারা চেনেন, কারা কীভাবে ২০/৩০ বছর যাবত দালালি করছে।

এ সময় ২০ দলীয় জোটের শরিক জাগপা সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আহমেদ উল্লাহ ও জাতীয় আন্দোলনের সভাপতি মুহিব খান, গোলাম মওলা রনিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।