বিএনপির এমপিরা জোর করে বলে আমরা বিরোধী দল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ পিএম, ২২ জুন ২০১৯

দেশের জনগণ বিএনপিকে সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসার সুযোগ দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। শনিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির এমপিরা জোর করে বলছেন আমরা প্রকৃত বিরোধী দল। দু:খজনক হলো দেশের জনগণ তাদের বিরোধী দলের আসনও দেয়নি। বাস্তবতা হচ্ছে তাদের বিরোধী দলের আসনেও বসার কোনো সুযোগ নেই। সংসদে তারা একটি বিরোধী গ্রুপ হিসেবে অংশগ্রহণ করছে।’

নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে নির্বাচনে বিএনপি যে ৫-৬টি আসন পেয়েছে এটাও তাদের পাওয়ার কথা ছিল না। এই ৫-৬টি কোথায় পেল এটা নিয়ে আওয়ামী লীগ গবেষণা করছে। এই দুর্বলতা আমরা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল সংসদে যাবে না। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘‘ওরা আসবে, কারণ বিএনপি আদর্শিক রাজনৈতিক দল নয়। তারা ক্ষমতার রাজনীতি করে। তাদের আসতে হবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর সেই কথা আজ সত্য হয়েছে। তারা নাকে খত দিয়ে এই সংসদে যোগ দিয়েছে। তারা মুখে এক কথা বলে ভেতরটা আরেক রকম। তারা ডাবল স্টান্ডার্ড রাজনীতি করে। এই ডাবল স্টান্ডার্ড রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।’

বাজেটের সমালোচনাকারীদের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বাজেট নিয়ে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সমালোচনা হয়েছে আবার প্রশংসাও হয়েছে। বাজেটের ওপর যারা গবেষণা করেন তারা বাজেটকে সমালোচনা করে জনবিরোধী বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই মানুষগুলোকে আমরা বারবার দেখি বছরে এই দিনটার (বাজেট পেশ) জন্য তারা অপেক্ষা করে। কখন বাজেট পেশ করা হবে। কখন এটার সমালোচনা করবে। এরা অতিথি পাখির মতো।’

তিনি বলেন, ‘অথচ এই লোকগুলোকে দেখেছি ওয়ান ইলেভেনের সময় ঘরের মধ্যে বসে যখন বাজেট দেয়া হয়েছিল তখন সেই বাজেটের প্রশংসা করতে। এই হচ্ছে তাদের চরিত্র। আর দুর্ভাগ্য যে তারা নিজেদের সুশীল হিসেবে দাবি করেন। প্রজ্ঞাবান, বিদ্বান ও বিজ্ঞ হিসেবে দাবি করেন। তবে, দেশের মানুষ তাদের প্রজ্ঞাবান ও বিজ্ঞবান মনে করে না। সুশীলও মনে করে না। বরং তারা যখনেই জনগণের কাছে গেছেন তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামরিক জান্তার সহযোগিতা নিয়েও তারা টিকে থাকতে পারেনি। এদের বক্তব্য জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’

নিজের মন্ত্রণালয় সম্পর্কে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি অর্থ বছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রায় ৯৯ শতাংশ বাজেট বাস্তবায়ন করেছে। বাজেট বাস্তবায়ন হচ্ছে বলেই নতুন বাজেটেও তার মন্ত্রণালয় বড় অঙ্কের বরাদ্দ পেয়েছে। আমাদের অঙ্গীকার ছিল নৌপথ ফিরিয়ে আনা হবে। আমরা ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বিএসসিতে নতুন নতুন জাহাজ যুক্ত হচ্ছে। নৌখাতে বেসরকারি সেক্টরের বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। মোংলা পোর্টের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। পায়রা বন্দর বাংলাদেশের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। মাতারবাড়ি যে বিদ্যুত কেন্দ্র হচ্ছে ভবিষ্যতে সেটা সি-পোর্টে পরিণত হবে। প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। গ্রামীণ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’

বিএনপির সমালোচনা করে খালিদ মাহমুদ বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছিল। খুনিদেরকে তারা পুরস্কৃত করেছিল। ইনডেমননিটি অ্যাক্টকে আইনে পরিণত করেছিল। আমৃত্যু সান্ধ্য আইন দিয়ে দেশ চালিয়েছে। আর তার দলের কাছে আজ শুনতে হচ্ছে গণতন্ত্রের কথা। যারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল তারা বলে গণতন্ত্রের কথা। এদের মুখে গণতন্ত্রের কথা বানায় না।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। বাংলাদেশে অনেক কারণে অনেক দণ্ডিত হয়েছেন কিন্তু এতিমের টাকা মেরে খেয়ে খালেদা জিয়া ছাড়া আর কেই দণ্ডিত হয়নি। খালেদা জিয়াকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। বারবার তার মুক্তি চাওয়া হচ্ছে। তার ছেলে তারেক রহমান আজকে পলাতক। প্রথমে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। এখন আর চিকিৎসার কথা বলেন না। বলেন আসতে পারছি না। আসতে পারছেন না কেন? তার ভয় হচ্ছে। দণ্ডিত আসামি। তিনি জানেন বাংলাদেশে এলে আইনকে মোকাবিলা করে তিনি পার পাবেন না।’

এইউএ/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।