হাইকমান্ডকে সময় দিয়ে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদলের আন্দোলন স্থগিত
বয়সসীমা তুলে দিয়ে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ছাত্রদলের আন্দোলনরত বিলুপ্ত কমিটির একাংশের নেতারা। একই সঙ্গে বিএনপির হাইকমান্ডের উপরও তারা আস্থা রাখছেন। সে কারণে শনিবার থেকে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ফের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করার সিদ্ধান্ত সিনিয়র নেতাদের আশ্বাসে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। দাবি মানতে বিএনপির হাইকমান্ডকে আরও সময় দেয়ার সিদ্ধান্তে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বয়সের সীমা না রাখা, স্বল্পমেয়াদী কমিটি গঠনসহ তিন দফা প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিনব্যাপী বিক্ষোভ করেন সংগঠনের বিলুপ্ত কমিটির একাংশের নেতারা। পরে ওইদিন রাতে দাবি পূরণে সাবেক ছাত্রনেতার আশ্বাসে সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
জানা গেছে, নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সাথে সাক্ষাৎ করেন আন্দোলনকারীরা। সিনিয়র নেতাদের কাছে তাদের দাবির বিষয়টি তুলে ধরে এ নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলার অনুরোধ জানান তারা।
এ সময় বিএনপির সিনিয়র নেতারা বিষয়টি নিয়ে শনিবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনার পাশাপাশি তারেক রহমানের সাথেও কথা বলবেন বলে আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করার পাশাপাশি তাদের উপর আস্থা রাখতে বলেন। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ছাত্রদলের কমিটি গঠনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্চ কমিটির সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ করার কথা বলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে তার শাহজাহানপুরের বাসায় আন্দোলনকারীরা সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া আন্দোলনকারীরা টেলিফোনসহ নানাভাবে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা ও ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, আমাদের দাবির বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার বিএনপির মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করে তাদের প্রতি আস্থা রাখতে বলেছেন। তাছাড়া সার্চ কমিটির সদস্যরাও আমাদেরকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে বলেছেন। তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা আরও অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে কারণে আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত থাকছে।
সার্চ কমিটির একজন সদস্য বলেন, নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গৃহীত পদক্ষেপ যৌক্তিক। আবার আন্দোলন-সংগ্রামে বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের অবদানও অস্বীকার করা যায় না। আমরা এর মাঝামাঝি একটা সমাধান চেয়েছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন এর সমাধান দেবেন।
জানা গেছে, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ জন্য বিএনপির বিভিন্ন উপ-কমিটি ও দুই অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে ছাত্রদলের সদ্য সাবেক নেতাদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। গত ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। আর কাউন্সিলে প্রার্থী হতে ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী যেকোনো বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং অবশ্যই বাংলাদেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হওয়াসহ তিনটি শর্ত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
কেএইচ/আরএস